শেষ বয়সে যাঁদের জমানো আমানতের ওপর নির্ভর করেই জীবন চলে, তাঁদেরই সবথেকে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় স্থায়ী আমানতের সুদের ওপর কোপ পড়লে। দিন দুয়েক আগেই ফের ফিক্সড ডিপোজিট বা স্থায়ী আমানতে সুদের হার কমিয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া (এসবিআই)। যার ফলে স্বাভাবিকভাবেই কেন্দ্রের ওপর বেজায় ক্ষুব্ধ প্রবীণেরা। তাঁদের অভিযোগ, বুড়ো-বুড়িদের বেঁচে থাকার অধিকারটাই কেড়ে নিতে চাইছে সরকার! এর পাশাপাশি তাঁরা এই আশঙ্কাও করছেন যে, আপাতত শুধু এসবিআই সুদের হার কমালেও, পরে অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কও একই পথে হাঁটবে।
এ বিষয়ে প্রবীণ ট্রেড ইউনিয়ন নেতা গুরুদাশ দাশগুপ্তর মতে, এটি অত্যন্ত ক্ষতিকারক সিদ্ধান্ত। কেন্দ্রীয় সরকারের অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক বিধুভূষণ ভৌমিকও তোপ দেগে বলেন, ‘সরকার চাইছে প্রবীণেরা বিদায় নাও।’ তিনি জানান, পেনশনের টাকা ক’টা বাদ দিলে ব্যাঙ্কের সুদই তাঁর বেঁচে থাকার সম্বল। কিন্তু বার বার সুদ কমানোর সিদ্ধান্ত বয়স্কদের বেঁচে থাকার অধিকারটুকুই কেড়ে নিচ্ছে। আবার, পুলিশকর্মী স্বামীর অকাল মৃত্যুর পর ব্যাঙ্কের সুদের ওপরেই ভরসা করতে হয় সোদপুরের মায়া দে’কে। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘ক্ষতি তো হবেই! কীভাবে চলব?’
অন্যদিকে, এসবিআইয়ের সুদের হার কমানোকে তত আমল দিতে নারাজ প্রাক্তন পুরকর্মী দীপঙ্কর চক্রবর্তী। আসলে এই ব্যাঙ্কটির ওপর বিন্দুমাত্র ভরসা নেই তাঁর। তিনি বলেন, ‘এসবিআই সব কিছুতেই বাড়াবাড়ি করে। অন্যান্য ব্যাঙ্ক তাদের মতো নয়।’ তবে কেন্দ্রীয় সরকারের এহেন ‘জনবিরোধী’ সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন তিনিও। এসবিআইয়ের এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলেও। প্রবীণ রাজনীতিবিদ তথা দীর্ঘদিনের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় যেমন এসবিআইয়ের এই জনবিরোধী সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করে বলেছেন, ‘খুবই খারাপ সিদ্ধান্ত। জনবিরোধী। আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’