কেউ বলছেন ঔদ্ধত্যের শতবর্ষ, আবার কেউ বলছেন স্পর্ধার শতবর্ষ। সমসাময়িক বা পরবর্তীকালের অনেক ক্লাব ময়দান থেকে হয় চিরতরে উধাও হয়ে গিয়েছে আর নাহয় জৌলুস হারিয়ে অস্তিত্বের জন্যে সংগ্রাম করছে। কিন্তু, ইস্টবেঙ্গল এখনও সগৌরবে এগিয়ে চলেছে। সমর্থকদের হৃদয়ে চিরস্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে লেসলি ক্লডিয়াস সরণি। বাঙালির চিরন্তন ঘটি-বাঙালের দ্বন্দ্বে নয়া মাত্রা যোগ করেছে ইস্টবেঙ্গলের আগমন। স্বাভাবিকভাবেই, এ হেন ক্লাবে শতবর্ষের উদযাপনটাও জাঁকজমক করেই হবে। সেই লক্ষ্যে আয়োজনের কোনও ত্রুটি করেননি কর্তারা।
মূল অনুষ্ঠানটি হবে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। বিকেল সাড়ে ৩টের সময় খোলা হবে নেতাজি ইন্ডোরের গেট। ‘আগে গেলে আগে পাবেন’- এই ভিত্তিতে যে কেউ প্রবেশাধিকার পাবেন নেতাজি ইন্ডোরে। কোনও টিকিট কাটার প্রয়োজন নেই। মূল অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। প্রদীপ প্রজ্বলন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হাজির করার চেষ্টা চলছে। তা যদি সম্ভব না হয়, তাহলে প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করবেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এরপর একটি সাংবাদিক বৈঠক করবেন কপিল দেব, সুনীল ছেত্রী, বাইচুং ভুটিয়া, ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়, মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যের মতো পুরস্কার প্রাপকরা।
আজ দুপুর ১২টায় ক্লাবে পতাকা উত্তোলন হবে। একইসঙ্গে ২০০টি দেশে ইস্ট বেঙ্গলের পতাকা উড়বে। জোড়াবাগানে ইস্ট বেঙ্গলের আতুঁরঘর সুরেশ চন্দ্র চৌধুরির বাড়িতে কেক কাটা হবে। বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার দেওয়া হবে লালডানমাওইয়া রালতেকে। তবে শোনা যাচ্ছে রালতের কাছে মোহন বাগান ও আইএসএলের দলের অফার রয়েছে। এ বিষয়ে ইস্ট বেঙ্গলের শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার বলেন, ‘রালতের সঙ্গে আমাদের এখনও কোনও চুক্তি হয়নি। তবে ওকে আমরা সম্মান জানানোর ব্যাপারে মনস্থির করেছি। ও যদি সেই সম্মান নিতে আসে তাহলে স্বাগত।’ মজিদ বাসকার কলকাতায় এলে কী করা হবে তা দু’তিন দিন পর চূড়ান্ত জানাবে ইস্ট বেঙ্গল।
এরপর হবে পুরস্কার বিতরণী । শতবর্ষে ‘ভারত গৌরব’ সম্মান পাচ্ছেন বিশ্বকাপজয়ী ভারত অধিনায়ক কপিল দেব। পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেওয়া হবে ‘কোচ অব কোচেস’ সম্মান। শতবর্ষে জীবনকৃতি সম্মান দেওয়ার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে দুই প্রাক্তন ফুটবলার মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়কে। গৌতম ভট্টাচার্য এবং প্রখ্যাত ধারাভাষ্যকার এবং ফুটবল লিখিয়ে নোভি কাপাডিয়া, এই দুই বরেণ্য সংবাদিককে সম্মান জানানো হবে। সংবর্ধনা দেওয়া হবে দুই রেফারি রণাঙ্কুর ঘোষ এবং সুনীল মল্লিককে। বিশেষ সম্মান দেওয়া হবে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে। ‘শতবর্ষের সেরা আবিষ্কার’ খেতাব পাবেন বাইচুং ভুটিয়া। সম্মাননা দেওয়া হবে ভারতীয় ফুটবল দলের বর্তমান অধিনায়ক সুনীল ছেত্রীকেও। অনুষ্ঠানে ক্লাবের অন্যতম দুই প্রতিষ্ঠাতা সুরেশচন্দ্র চৌধুরী ও শৈলেশ বসুর পরিবারের সদস্যদের সম্মানিত করা হবে। ক্লাবের তিন প্রবাদপ্রতিম কর্তা জ্যোতিষ গুহ, ডাক্তার নৃপেন দাস ও দীপক (পল্টু) দাসের পরিবারের সদস্যরাও সম্মানিত হবেন।