দেশে তিন তালাক নিষিদ্ধ হয়েছে। কিছুদিন আগেই সুপ্রিম কোর্ট তিন তালাক নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। কিন্তু এত কিছুর পরও তা বাস্তবে কতটা কার্যকর হবে সে বিষয়ে সন্দেহ আছে। কারণ, মুর্শিদাবাদে কিন্তু তিন তালাকে কোনও ছেদ পড়েনি। এমনকি থানাতে অভিযোগ করেও কোনও লাভ হয়নি। মুসলিম অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদ জেলার তালাকপ্রাপ্ত মহিলাদের বেশির ভাগই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন, এই বিল কতটা কার্যকরী হবে, তা নিয়ে।
জলঙ্গির মিনারা বেগম। তিন তালাক দিয়ে, স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে মিনারাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। দুই সন্তান নিয়ে বাপের বাড়িতে ওঠেন তিনি। এখন অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোনও রকমে দিন গুজরান হয়। খোরপোশের মামলা করেছেন। তিনি বললেন, “শুনেছি তিন তালাক বিল পাশ হয়েছে। কিন্তু খাতায়-কলমে অনেক কিছুই আইন হয়। কিন্তু গরিবদের জন্য কিছুই নয়। আমাদের জীবনটা দু’মুঠো ভাতের জন্য কেবলমাত্র লড়াই করতে করতে কেটে যাচ্ছে। আমাদের কিছু হবে না”।
মুর্শিদাবাদের তালাকপ্রাপ্ত মহিলাদের নিয়ে কাজ করে রোকেয়া উন্নয়ন সমিতি। সংগঠনের সম্পাদক খাদিজা বানু বলছেন, “তিন তালাক বন্ধ বিল পাশ হলেও তা কেবলমাত্র একটি ফৌজদারি তকমা ছাড়া আর কিছুই নয়। সংখ্যালঘু মহিলাদের সন্তুষ্ট করার জন্য এই বিল পাশ। কারণ এই বিলে খোরপোশ দেওয়ার ব্যাপারে কোনও নির্দিষ্ট কথা বলা নেই। একাধিক বিয়ে যে করতে পারবে না, সে ব্যাপারেও কোনও কিছু বলা হয়নি। তাই কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা নিয়ে যথেষ্টই সন্দিহান”। তালাকপ্রাপ্ত অসহায় মহিলাদের আইনি সহায়তা দিয়ে থাকেন আইনজীবী নার্গিস তানজিমা। তিনি বললেন, “সুপ্রিম কোর্ট তিন তালাক নিষিদ্ধ করলেও স্থানীয় থানা কোনও ব্যবস্থা নেয় না ধর্মীয় অজুহাত দেখিয়ে। সমাজকে সচেতন না করতে পারলে শুধুমাত্র আইন করে বন্ধ করা সম্ভব নয় তিন তালাক”।