সমস্যায় পড়েছেন? কেউ আপনাকে বিপদে ফেলার চেষ্টা করেছে? তাহলে ‘দিদিকে বলো’। এটাই এখন মুশকিল আসানের নয়া মন্ত্র। ‘নায়ক’ সিনেমার যেমন যে কোনও অভাব-অভিযোগ নিয়ে ফোন আসত মুখ্যমন্ত্রী অনিল কপূরের কাছে। আর সেই ফোন পেয়েই অকুস্থলে ছুটে গিয়ে সমস্যার সমাধান করতেন একদিনের মুখ্যমন্ত্রী। এবার সেই কায়দাতেই সমস্যার সমাধান করবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নজরুল মঞ্চে বৈঠক করেন তৃণমূল নেত্রী। যেখানে হাজির ছিলেন ব্লক সভাপতি থেকে শুরু করে দলের শীর্ষস্তরের নেতারা। উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক-মন্ত্রীদেরও অনেকে। সেখানেই ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচীর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেন মমতা। যার ফলে সাধারণ মানুষ তাঁদের সমস্যার কথা এবার সরাসরি জানাতে পারবেন মুখ্যমন্ত্রীকে।
প্রত্যন্ত গ্রামে বা মফস্বলের সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন সমস্যার কথা অনেকসময়েই পৌঁছায় না নবান্নে। আর সেই জন্যই সাধারণ মানুষের আরও কাছে পোঁছতে নয়া উদ্যোগ রাজ্য সরকারের। এই কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে www.didikebolo.com একটি ওয়েবসাইট খোলা হয়েছে যেখানে সাধারণ মানুষ তাঁদের সমস্যার কথা সরাসরি জানাতে পারবেন দিদিকে।
শুধু সমস্যাই নয়, রাজ্যকে আরও সুন্দর করে গড়ে তুলতে আপনার মূল্যবাণ মতামতও আপনি সরাসরি জানাতে পারবেন দিদিকে। ওয়েবসাইটে একটি হেল্পলাইন নম্বরও দেওয়া রয়েছে, ৯১৩৭০৯১৩৭০, যেখানে ফোন করেও সমস্যা জানানো যাবে। ওয়েবসাইটটি বাংলা এবং ইংরাজি, দুটি ভাষাতেই ব্যবহার করা যাবে।
ওয়েবসাইটটি কীভাবে ব্যবহার করবেন আপনি, তার কয়েকটি নিয়মাবলী–
১। ওয়েবসাইটে ঢুকলেই ‘কমেন্ট বাক্স’ নামে একটি ফাঁকা জায়গা রয়েছে, যেখানে আপনি আপনার মতামত বা সমস্যার কথা বিস্তারিত জানাতে পারবেন। আপনি সমস্যার কথা জানাতে চাইছেন নাকি মতামত জানাতে চাইছেন, তার জন্য ‘কমেন্ট বাক্স’–র নিচে একটি টিক দেওয়ার জায়গাও রয়েছে।
২। আপনার বক্তব্যের সমর্থনে যদি কোনও প্রমাণপত্র থাকে, তাহলে সেটিও দিয়ে দিলে ভালো হয়। যদি কোনও ছবি বা নথি থাকে, সেটি সংযুক্ত করলে আপনার বক্তব্যটি আরও জোরদার হয়। সংযুক্ত করারও অপশন রয়েছে নীচে।
৩। নীচে আপনার নাম, বয়স, লিঙ্গ লিখুন এরপর। আপনার সঙ্গে যাতে যোগাযোগ করা যায়, তার জন্য আপনার মোবাইল নম্বরটিও দিয়ে দিন। সবচেয়ে ভাল হয় হোয়্যাটঅ্যাপ নম্বর দিয়ে দিলে। সেখানেও আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।
৪। এছাড়া আপনি কোন জেলায় বাস করেন এবং কোন বিধানসভা কেন্দ্রের আওতায় পড়ে আপনার এলাকা, তা লিখে জমা দিন। এরপরই আপনার অভিযোগ সরাসরি পৌঁছে যাবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে।
গতকাল মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, আগামী ১০০ দিনে ১০ হাজারেরও বেশি গ্রামে যাবেন তৃণমূল নেতারা। দল থেকেই ঠিক করে দেওয়া হবে কোন নেতা কোন গ্রামে যাবেন। তাঁরা গ্রামে গিয়ে বুথের যে কোনও অভিযোগ, সমস্যা নিয়ে দলীয় কর্মী এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন। রাতে গ্রামেই থাকবেন। গ্রামে দের সঙ্গে কথা বলবেন। সরকারি প্রকল্পের সুবিধা-সহ কোনও অভাব অভিযোগ রয়েছে কিনা তা-ও জানতে চাওয়া হবে। সবশেষে জনসংযোগের পর সেখানে তৃণমূলের পতাকা তোলা হবে।