বাঙালির সঙ্গে বর্ণের পরিচয় ঘটিয়েছিলেন যেই ব্যক্তি, গতকাল ছিল সেই ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মৃত্যুদিবস৷ বাঙালির কাছে এই দিনটি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের৷ রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে অনেকেই এই দিন পালন করে থাকেন৷ রাজ্যের বেশ কিছু ছাত্র সংগঠনও পালন করেছিলেন এই দিন। অল ইন্ডিয়া ডিএসও-র তরফেও সোমবার বিদ্যাসাগরের ছবিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে৷ আর ডিএসও-র সেই অনুষ্ঠান ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক৷ যার ফলে ফের একবার শিরোনামে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর৷
ডিএসও-র শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠানে ‘বর্ণপরিচয়’ স্রষ্টার যে ছবি দেওয়া, তার নিচে বাংলা নয়, হিন্দিতে লেখা – মহান ব্যক্তিত্ব ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মৃত্যু দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি৷ আর এখানেই বিতর্ক উস্কে উঠেছে৷ বাঙালিকে যে ব্যক্তি হাত ধরে বাংলা ভাষা শিখিয়েছেন, তাঁকেই শ্রদ্ধা জানানোর ভাষা বাংলা নয়, হিন্দি!কলকাতার বুকে একটি বামপন্থী ছাত্র সংগঠনই বা কীভাবে নিজেদের বাংলা ভাষাকে সরিয়ে এভাবে হিন্দিকে আপন করে নিল, তা নিয়েই নানা মহলে এই প্রশ্ন উঠছে৷ সরব হচ্ছেন সকলে৷
এই বিদ্যাসাগর আবেগেই মাস দুই আগে কলকাতা উত্তাল হয়ে উঠেছিল৷ মে মাসের একেবারে গোড়ার দিকে তৎকালীন বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহর প্রচার মিছিল ঘিরে ধুন্ধুমার হয়ে ওঠে কলেজ স্ট্রিট চত্বর৷ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনের সদস্যদের উপর মিছিল থেকে হামলার অভিযোগ ওঠে৷ সেই বিশৃঙ্খলাই গিয়ে পৌঁছয় বিদ্যাসাগর কলেজে৷ প্রবেশদ্বারে বসানো বিদ্যাসাগরের মূর্তিটি ভেঙে দেয় বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা৷ বাঙালির আবেগে এমন আঘাত মেনে নিতে পারেননি রাজ্যবাসী৷ এই একটি ইস্যুতে রাজনীতি ভুলে রাজপথে প্রতিবাদে নেমেছিলেন বিদ্বজ্জন থেকে সাধারণ মানুষ৷ রাজ্য সরকারও এর তীব্র বিরোধিতা করে তড়িঘড়ি নতুন করে বিদ্যাসাগরের মূর্তি পুনঃস্থাপন করে বিদ্যাসাগর কলেজের প্রবেশদ্বারে৷ এই পর্বের রেশ কাটতে না কাটতেই ফের বিতর্কে বিদ্যাসাগর৷