তিলোত্তমার বুকে রাস্তাগুলো নাম শুনলে বিখ্যাত মানুষদের কথা স্মরণ হয়। অনেক বিদেশির কাছে সেই মানুষগুলো সম্পর্কে উৎসাহ বাড়ায়। এইবার সেই তালিকায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। ম্যান্ডেভিলা গার্ডেন্সের বহুতল ‘পারিজাত’–এ বহু বছর ছিলেন তিনি। এবার সেই রাস্তার নাম হতে চলেছে প্রয়াত সাহিত্যিক, কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের নামে।
এখন সেই ফ্ল্যাটে থাকেন সুনীল–পত্নী স্বাতী গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘এই বাড়িতে বসেই কত গুরুত্বপূর্ণ উপন্যাস, গল্প, কবিতা লিখেছেন সুনীল। কত লেখক, কবি, সম্পাদক এসেছেন ওঁর কাছে। সুনীলের নামে রাস্তা হচ্ছে, স্ত্রী হিসেবে আমি অবশ্যই খুশি।’ শুধু তিনি নন। কলকাতা পুরসভার এই সিদ্ধান্তে বেশ খুশি শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। বললেন, ‘খুবই উচিত সিদ্ধান্ত। সুনীলের নামে রাস্তার নামকরণের সিদ্ধান্ত আরও আগেই নেওয়া উচিত ছিল। অবশেষে সেটা হওয়ায় একজন সাহিত্যিক হিসেবে আরও বেশি ভাল লাগছে। পুরসভাকে এর জন্য ধন্যবাদ জানাই।’ এই তালিকায় আছেন কবি জয় গোস্বামী। তিনি জানালেন, ‘বাংলা সাহিত্যে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের অবদান অপরিসীম। সেই অবদানকে স্মরণীয় করে রাখতে ম্যান্ডেভিলা গার্ডেন্সের নাম ‘কথাসাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সরণী’ করার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা অত্যন্ত আনন্দের।’
কবিতা অ্যাকাদেমির চেয়ারম্যান কবি সুবোধ সরকার জানালেন, ‘সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্যের প্রথিতযশা কবি ও ঔপন্যাসিক। অসংখ্য কবিকে পাদপ্রদীপের আলোয় তুলে এনেছেন সুনীলদা। আমরা ম্যান্ডেভিলা গার্ডেন্সের সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলাম সুনীলদার মাধ্যমেই। যাঁরা সাহিত্যের সঙ্গে পরিচিত নন বা বাঙালি নন, তাঁরাও এবার থেকে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় নামটা উচ্চারণ করবেন। এই সিদ্ধান্তের ফলে নতুন প্রজন্মও তাঁর সঙ্গে পরিচিত হয়ে উঠবে।’ প্রবীণ সাহিত্যিক অমর মিত্র বলেন, ‘এখন তো রাস্তার নামকরণ হয় সাধারণত রাজনীতিবিদদের নামে। সেই জায়গায় একজন সাহিত্যিকের নামে রাস্তার নামকরণ হচ্ছে এটা খুবই ভাল সিদ্ধান্ত। যাঁরা এতে বাংলা সাহিত্যেরও পরিচিতি বাড়বে।’ শহর ছড়িয়ে আছে বহু বিখ্যাত মানুষের নামাঙ্কিত সরণী। মমতার সরকারের এই উদ্যোগ প্রথম থেকেই বাহবা কুড়িয়েছে।