প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদীর প্রথম ইনিংসের পাঁচ বছরেও সংসদের উচ্চকক্ষে শরিকদের নিয়ে বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল না। কিন্তু সে সময় একক চেষ্টায় অবস্থা কিছুটা সামাল দিতেন তিনি। কখনও কংগ্রেসের পি চিদম্বরম, জয়রাম রমেশ, কখনও তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন, সুখেন্দুশেখর রায়রা যখন নিয়ম দেখিয়ে কথায় কথায় প্যাঁচে ফেলতেন মোদী সরকারকে, তখন রাজ্যসভার নিয়ম দেখিয়েই পাল্টা যুক্তি দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যেতেন। এর পাশাপাশি নিয়মিত লিখতেন ব্লগও। কিন্তু অসুস্থতার কারণে বহুদিন ধরেই আর রাজ্যসভায় আসছেন না দুঁদে বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী অরুণ জেটলি। তাঁর অনুপস্থিতিই এখন প্রতি পদে অনুভব করছে বিজেপি শিবির।
প্রসঙ্গত, লোকসভায় তিনশোর বেশি আসন নিয়ে জিতে আসার পর রাজ্যসভায় পদে পদে কাঁটার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বিজেপিকে। আর তাই শরিকদের পাশাপাশি নবীন পট্টনায়ক, জগন্মোহন রেড্ডি, কে চন্দ্রশেখর রাওদের সমর্থন পেতে খোদ প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করতে হচ্ছে। জেটলির অনুপস্থিতিতে থাওরচন্দ্র গহলৌতকে রাজ্যসভার নেতা করা হলেও আইনের বিষয়ে তিনি তেমন ‘চৌকস’ নন। এই সুযোগে বিরোধীরাও চেপে ধরছে সরকারকে। ১৭টি বিরোধী দল একজোট হয়ে সভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডুকে চিঠি লিখে বিলগুলি সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন। কাল থেকেই শুরু হচ্ছে সংসদের বর্ধিত মেয়াদ। যেখানে প্রশ্নোত্তর পর্ব বাতিল করে বিল পাশে নজর মোদী সরকারের।
অতীতে এই ধরনের পরিস্থিতিতে বিরোধীদের চাপে রাখতে জেটলি নিয়মিত ব্লগ লিখতেন। এবারে সেই কাজ শুরু করে ঘাটতি কিছুটা পূরণের চেষ্টায় নেমেছেন অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ রাজ্যসভার সাংসদ ও বিজেপির সাধারণ সম্পাদক ভূপেন্দ্র যাদব। তিনিও আইনজীবী। বিরোধীদের একহাত নিতে তিনিও ব্লগ লিখেছেন। যার বক্তব্য, মোদীর গত জমানায় সংসদের অধিবেশন চলতে দেওয়া হয়নি। অনেক বিল আটকে রয়েছে। আর বিরোধীরা বিল সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবি তুলছেন। ইউপিএর শেষ পাঁচ বছরে মাত্র ৫টি বিল রাজ্যসভার সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। অথচ মোদী সরকারের প্রথম জমানায় পাঠানো হয়েছে ১৭টি। ভূপেন্দ্র ব্লগ লিখছেন বটে। তবে জেটলির মতো তা তেমন কার্যকর হচ্ছে কই? প্রশ্ন উঠছে খোদ গেরুয়া শিবিরের অন্দরেই।