মোদী সরকার দ্বিতীয়বারের জন্য দিল্লীর মসনদে ফিরে আসার পর থেকেই কিছু জল্পনা শুরু হয়েছে। তারমধ্যে অন্যতম হল ভারতীয় রেলের বেসরকারিকরণ করার জল্পনা। আর সেটাই ধীরে ধীরে বাস্তবায়িত হতে চলেছে। আর তা যদি সত্যিই হয় বিপাকে পড়বে সাধারণ মানুষ থেকে রেলকর্মী সবার। এইবার আরও একটি কোপ পড়তে চলেছে রেলকর্মীদের ওপর। রেলের কোনও কর্মী ৩০ বছর ধরে চাকরি করছেন অথবা তাঁর ৫৫ বছর বয়স হয়ে গিয়েছে— এমন কর্মীদের চাকরিতে টিকে থাকার আর নিশ্চয়তা রইল না।
কর্মী সংগঠনগুলির অভিযোগ, রেলে প্রায় সাড়ে ১২ লক্ষ কর্মী কাজ করেন। নির্দেশ কার্যকর হলে ৩ লক্ষ কর্মী কাজ হারাবেন। কেন্দ্রের বক্তব্য, সমস্ত কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থাকেই একই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ও ব্যাঙ্কগুলিতে প্রযোজ্য হবে। যার ফলে আরও বেশি সংখ্যক কর্মী কাজ হারাবেন।
৯ জুলাই রেল বোর্ড সব জ়োনের জিএম, রেলের সংস্থাগুলির প্রধানদের চিঠিতে নির্দেশ পাঠিয়েছে, অফিসার, কর্মীদের পর্যালোচনা শুরু করতে হবে। জ়োনাল ম্যানেজাররা নিচুতলায় নির্দেশ দিতে শুরু করেছেন। নির্দেশ— সমস্ত কর্মী, অফিসারদের ঠিকুজিকুষ্ঠি তৈরি করতে হবে। কে কত দিন কাজ করছেন, কত বেতন, সময়মতো কাজে আসেন কি না, খরচ বাঁচিয়ে কাজ করেন কি না, নিজে সিদ্ধান্ত নেন কি না, অধীনস্থ কর্মীদের মধ্যে শৃঙ্খলা রক্ষা করতে পারেন কি না, পাঁচ বছরে অসুস্থতার জন্য কত দিন ছুটি নিয়েছেন, সততা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে কি না— এই সব তথ্য চাওয়া হচ্ছে।
কোনও কর্মীর বিরুদ্ধে ভিজিল্যান্স মামলা বা তাঁর কখনও জরিমানা হয়েছে কি না, জানতে চাওয়া হয়েছে জ়োনগুলির কাছে। ওই কর্মী শারীরিক ও মানসিক ভাবে কতখানি সুস্থ, সে কথাও জানাতে হবে উপরওয়ালাকে। কর্মীদের ৫৫ বছর বয়স অথবা ৩০ বছরের চাকরির মেয়াদের মধ্যে যেটি আগে হবে, সেটিই প্রযোজ্য হবে। এ, বি, সি, তিনটি গ্রুপের কর্মীদের ক্ষেত্রেই এই নিয়ম কার্যকর হবে। এই নিয়ম কার্যকর হলে বেশ ক্ষতির মুখে পড়বে রেলকর্মীরা। বেকার হয়ে পড়বেন লক্ষাধিক।