প্রতি মরশুমে জুন মাস থেকে আগস্ট মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত বীজ বপনের প্রক্রিয়া চলে। এখন পর্যন্ত সেরকম বৃষ্টি না হওয়ায় এবছর সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। ফলে মাথায় হাত পড়েছে কৃষকদের। দক্ষিণ বঙ্গের জেলাগুলিতে কম বৃষ্টিপাতের দরুন উদ্বিগ্ন হয়ে রাজ্য কৃষি দফতর চাষীদের স্বস্তি দিতে বিকল্প চাষের পদ্ধতি খুঁজে বের করছে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জলবায়ুর এই পরিবর্তনে চিন্তিত হয়ে আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন কৃষকদের যাতে চাষ করতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেজন্য সমস্ত ব্যবস্থা নিতে। তিনি বিকল্প চাষের বিভিন্ন পদ্ধতিকে গ্রহণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন যাতে অল্প বৃষ্টিপাতেও চাষ করা যায়। দফতর নদীর জল দিয়ে সেচ করে এবং সাবমার্সিবেল পাম্প ব্যবহার করে খারিফ শস্যের চাষে সাহায্য করতে উদ্যোগী হয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, আমরা বাংলা কৃষি সেচ যোজনার সূচনা করেছি যার মাধ্যমে চাষিদের কম জল ব্যবহার করে ক্ষুদ্র সেচের মাধ্যমে চাষে সাহায্য করা হবে। এই প্রযুক্তিতে খুব অল্প জল ব্যবহার করে নানা ধরণের ফল ও আনাজ চাষ করা যায়। আমরা এই প্রকল্পকে সারা রাজ্যে ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করছি।
কৃষি দপ্তর চাষিদের মধ্যে প্রচার চালাচ্ছে জল সংরক্ষণের বিষয়ে এবং পাশাপাশি প্রচার করছে ভূগর্ভস্থ জলের অপচয় না করতে। প্রসঙ্গত, এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক আগে থেকেই জল সংরক্ষণের জন্য সারা রাজ্যে ‘জল ধরো জল ভরো’ কর্মসূচী চালু করেছেন।
এখনও পর্যন্ত সারা রাজ্যে গড় ২৭ শতাংশ বৃষ্টির ঘাটতি আছে। দক্ষিণবঙ্গে সেই ঘাটতি ৬০ শতাংশ। পূর্ব এবং পশ্চিম বর্ধমানে এই ঘাটতি ৬২ শতাংশ, উত্তর ২৪ পরগনায় ৫৮ শতাংশ, নদীয়ায় ৫৫ শতাংশ এবং পূর্ব মেদিনীপুরে ৫০ শতাংশ।
বীরভূম, বাঁকুড়া, মুর্শিদাবাদ, পুরুলিয়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং হাওড়াতে বৃষ্টির ঘাটতি ৪০ শতাংশ। এবং সারা রাজ্যে এই অল্প বৃষ্টির ফলে বাঁধে আটকে রাখা জলের পরিমাণও খুব অল্প, যা সরকারকে চিন্তায় ফেলেছে।