প্রতি বছর বৃষ্টি মানেই বেহালার কোথাও গোড়ালি ডোবা তো কোথাও হাঁটুজল জমে যাওয়া। বৃষ্টি থামলেও এলাকাগুলি নীচু হওয়ায় জমা জল সহজে নামতে চায় না। সখেরবাজার, শীলপাড়া, কদমতলা, চৌরাস্তা, পর্ণশ্রী–সহ ডায়মন্ড হারবার রোডের দু’পাশের বেশ কিছু এলাকাতেই এই সমস্যা রয়েছে। দীর্ঘদিনের সেই সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হয়েছে কলকাতা মেট্রোপলিটান ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)। শুরু হয় ডায়মন্ড হারবার রোড থেকে সামান্য দূরত্বে জেমস লং সরণি বরাবর টানেল বসানোর কাজ।
জেমস লং সরণিতে বসেছে নিকাশি টানেল। কাজ শেষ। রবিবার রাত থেকেই এটি চালু করে দেওয়া হল। স্বাভাবিকভাবেই আশা করা যাচ্ছে, জল জমা থেকে রেহাই পাবেন বেহালাবাসী। গতকাল সকালে সুড়ঙ্গে নেমে ঘুরে দেখেন পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী এবং কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। পরিদর্শনের পর তিনি বলেন, ‘বেহালার নিকাশি সমস্যা দীর্ঘদিনের। এবার সেই সমস্যা মিটবে। ৩.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ টানেলটি করতে খরচ হয়েছে ১০০ কোটি টাকা। এই টানেলের মাধ্যমে জল গিয়ে পড়বে নয়ানজুলিতে।’
সূত্রের খবর, টানেলটি চালু করে দেওয়ার পর আশপাশের এলাকার সঙ্গে পাইপ লাইনের মাধ্যমে টানেলটি যুক্ত করা হবে। বৃষ্টি হলেই বিভিন্ন এলাকার জল পাইপের মাধ্যমে নেমে চলে আসবে টানেলে। কমবে জলযন্ত্রণা। কেএমডিএ–র আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, ‘বেহালার সখেরবাজার থেকে জেমস লং সরণি বরাবর ঠাকুরপুকুর পাম্পিং স্টেশন পর্যন্ত মাটির নীচে সুড়ঙ্গ করে বসছে দীর্ঘ এই টানেলটি। এর সর্বোচ্চ ব্যাস ২.৪ মিটার। জনজীবন, যান–চলাচল সচল রেখেই এই কাজ করতে হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এভাবে কাজ করাটা বেশ কঠিন ছিল। এই প্রথমবার কলকাতার কোনও নিকাশি ব্যবস্থায় টানেল বোরিং মেশিন বসানো হচ্ছে। ২৫০ থেকে ৩০০ মিটার দূরত্বে গর্ত করে টানেল বোরিং মেশিন নামিয়ে সুড়ঙ্গ করে সেখানে পাইপ বসিয়ে দেওয়া হয়। একের পর এক পাইপ বসিয়ে সেগুলি জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। নিকাশি ব্যবস্থায় পলি, নোংরা চলে এলে সহজে পরিষ্কারও করে ফেলা যাবে।’