একটা সময় দ্বন্দ্বযুদ্ধ খুব বিখ্যাত ছিল৷ যেখানে দুটো মানুষ পরষ্পরের বিপক্ষে লড়াই করত। এই মানুষ দুটো যে সবসময় শুধু মাত্র নিজেদের জন্যেই লড়াই করত তা কিন্তু নয় কখনো দেশ কিংবা জাতির হয়েও প্রতিনিধিত্ব করত। দেখা যেত, কেবল দুজনের লড়াইয়ের জয়-পরাজয়ের উপর নির্ভর করেই গোটা যুদ্ধের ফলাফল নির্ধারিত হতো। ক্রিকেটে একজন ব্যাটসম্যান আর একজন বোলারের লড়াইটাও কিন্তু অনেকটা এমনই।
একজন বোলার গতির মাধ্যমে মিডল স্ট্যাম্প উড়িয়ে দিচ্ছে, একজন ব্যাটসম্যানের জন্য এর চেয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতি আর কী হতে পারে? তবে এর সাথে সাথে শোয়েব আকতারের বোলিংয়ের বিপক্ষে সৌরভ গাঙ্গুলীর পিচে ছটফট করা কিংবা অ্যালান ডোনাল্ডের গতির সামনে আজহারউদ্দিনের লম্ফঝম্ফও দর্শকদের আনন্দ দেয়। ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে যাকে ধরা হয়, সেই ব্র্যাডম্যানকেও লারউডের গতি দিয়েই একটি সিরিজে আটকানো হয়েছিল।আর একথা সর্বজনবিদিত যে ক্রিকেটের ২২ গজে দ্রুত গতির বোলাররা সবসময়েই দাপট দেখিয়ে এসেছে৷ তাই দেখে নেওয়া এক সেরা দশ দ্রুতগতির বোলারকে৷
দশ নম্বর স্থান পেলেন ডেল স্টেইন৷ এই সময়ের সেরা ফাস্ট বোলার তার গতির সাথে লাইন-লেংথের জন্যও বিখ্যাত। ২০০০ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৫৫.৭ কি.মি./ঘণ্টা গতির একটি রেকর্ড গড়েন তিনি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে৷২০১০ সালে আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে নিজের রেকর্ড ভেঙ্গে ১৫৬.২ কি.মি./ঘণ্টা গতির রেকর্ড গড়েন।
কেরিয়ার দীর্ঘস্থায়ী না হলেও, যতদিন খেলেছেন ততদিন ব্যাটসম্যানদের ত্রাস হয়েই ছিলেন এই কিউই। তিনি শেইন বন্ড৷ যার কেরিয়ার সংক্ষিপ্ত হয়ে গিয়েছিল শুধুমাত্র আঘাতে। ভিন্ন ধরনের স্টাইলের কারণেও ক্রিকেটপ্রেমীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছিলেন তিনি। ২০০৩ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৫৬.২ কি.মি./ঘণ্টা গতির রেকর্ডটিও করেন তিনি।
অষ্টম স্থান পেলেন মহম্মদ সামি৷ ওয়াসিম এবং ওয়াকারের শেষের দিকে তাঁর কেরিয়ার শুরু হওয়ায় ভাবা হয়েছিল তিনি হয়ত হবেন তাঁদের উত্তরসূরী। কিন্তু গতির সাথে লাইন-লেংথের সমন্বয় করতে না পারায় তাঁর কেরিয়ার দীর্ঘায়িত হয়নি। এরই মাঝে ২০০৩ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১৫৬.৪ কি.মি./ঘণ্টা গতির বলটি করেন সামি।
সপ্তম স্থান পেলেন দাপুটে খেলোয়াড় মিচেল জনসন৷ গোটা খেলোয়াড় জীবনজুড়ে পুরোটা সময় তিনি গতিশীল ছিলেন, তা বলা না গেলেও ২০১৩ সালের অ্যাশেজে তিনি নিয়মিত ১৫০+ কি.মি./ঘণ্টা গতিতে বল করে ইংলিশ ব্যাটসম্যানদেরকে অস্বস্তিতে ফেলেছেন। এই সিরিজেরই চতুর্থ টেস্টে ১৫৬.৮ কি.মি./ঘণ্টা গতিতে বল করে রেকর্ডটি করেন তিনি। একই সাথে সেই সময়ের অন্যতম সেরা গতিশীল বোলার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন এই অস্ট্রেলিয়ান।
ষষ্ঠ স্থানে রাখা হল ফিডেল অ্যাডওয়ার্ডসকে, যাঁর বোলিং স্টাইল কিছুটা ওয়াকার ইউনুসের মতো ছিল, কিন্তু একজন ফাস্ট বোলার হিসেবে তার উচ্চতা ছিল যথেষ্ট কম। বোলার হিসেবে মোটেই ধারাবাহিক ছিলেন না তিনি, তবে গতির দিক থেকে বিবেচনা করলে ধারাবাহিক বলা চলে। ২০০৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ান্ডারার্সে একটি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে তিনি এই কৃতিত্ব গড়েন।
এর পরে আসবেন অ্যান্ডি রবার্টস৷ যিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিখ্যাত পেস আক্রমনের অন্যতম সদস্য ছিলেন। হোল্ডিং, মার্শাল, গার্নার কিংবা রবার্টস- প্রত্যেকেই গতিতে সেরা হলেও তার যুগের বেশিরভাগ ব্যাটসম্যান গতিশীল বলে তাকেই স্বীকৃতি দিয়েছেন। ১৯৭৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়াকা গ্রাউন্ডে তিনি এই রেকর্ড গড়েন।
এবার ১৯৭৬ সালে যে মেশিন দিয়ে গতি পরিমাপ করা হতো, সেটির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ আছে। তবে এটি নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, থমসন তার যুগের সেরা গতির পেসারই ছিলেন। তার বলের এই গতি পরিমাপ করা হয়েছিল ওয়াকা গ্রাউন্ডে। তবে থমসনের যুগের অনেক ব্যাটসম্যানদের বিশ্বাস, তিনি পরবর্তী যুগের ব্রেট লি কিংবা শোয়েব আকতারের চেয়েও বেশি গতিতে বোলিং করতেন। এমনকি জেফ্রির নিজের মনেও এই বিশ্বাসটা আছে। অনেকেরই ধারণা, ১৯৭৬ সালে কাঁধে আঘাত পাওয়ার আগে থমসন তার সেরা সময়ে ১৬২ থেকে ১৭০ কি.মি./ঘণ্টা গতিতে বল করেছেন।
খেলার মাঠে খুব অল্প দিন থাকলেও যতদিন খেলেছেন দাপট দেখিয়েছেন শন টেইট৷যতদিন খেলে গিয়েছেন, ততদিন গতির সাথে আপোষ করেননি। প্রথাগত ফাস্ট বোলারদের মতো উচ্চতা না পাওয়া সত্ত্বেও তার বোলিংয়ে পেস এবং স্কিডের সাথে সাথে লাইন-লেংথও ভালো ছিল। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১০ সালে নেপিয়ারে তিনি এই রেকর্ডটি গড়েন৷ তাই তৃতীয় স্থান তাঁরই দখলে৷
ব্রেট লি৷ ২২ গজের দাপুটেদের মধ্যে অন্যতম৷ একটা সময় তিনিও অনবরত ১৫০ কি.মি./ঘণ্টা গতিতে বল করে যেতেন। ২০০৫ সালে নিউজিল্যান্ডে…