বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে, বরং বলা ভালো মোদী জমানায় একটা বিরাট জায়গা জুড়ে রয়েছে ধর্মের বিভেদ, জাত-পাতের বিষয় নিয়ে দেশে একের পর এক অমানবিক ঘটনা ঘটেই চলেছে। বেশিরভাগ ঘটনার ক্ষেত্রেই নিশানায় থাকছে গেরুয়া শিবিরের ভক্তরা। এমনকি অনেক জায়গায় নামাজ পাঠে নিষেধাজ্ঞা জারি নিয়েও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। তবুও সব খারাপের মধ্যেই কিছু ভালো থাকে। হাজার অন্ধকারের মধ্যেও থাকে এক চিলতে আলো। তেমনই এক চিলতে আলো থুড়ি এক বিরল ঘটনার সাক্ষী থাকলো উত্তরপ্রদেশ।
উত্তরপ্রদেশেরই এক মাদ্রাসায় পড়াশুনা শুরু হয় গায়ত্রী মন্ত্র জপের মাধ্যমে! সঙ্গে পড়া হয় কলমাও। এই মাদ্রাসায় শুধু যে গায়ত্রী মন্ত্র বা কলমা পাঠ হয় তাই নয়, প্রতিদিন ‘ভারত মাতা কি জয়’, ‘হিন্দুস্তান জিন্দাবাদ’, ‘ইনকলাব জিন্দাবাদ’, ‘দেশ কি অমর শহিদোঁ কি জয়’-এর মতো স্লোগানও উচ্চারিত হয়, যা আক্ষরিক অর্থে মুসলিম সমাজে ‘নিষিদ্ধ’। বিগত ৮ বছর ধরে এই রীতিই মেনে আসছে এই মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। উল্লেখ্য, এই মাদ্রাসাতে পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ১৮০, তারা প্রত্যেকেই এই রীতি নিয়ে ভীষণ সজাগ। তাদের মতে, এখানে কোনও ধর্মের ভেদাভেদ নেই, কেউ করারও চেষ্টা করে না। গায়ত্রী মন্ত্রের যা ব্যাখ্যা, কলমারও তাই মানে।
শুরুর দিকে এই মাদ্রাসা চরম বিরোধের মুখে পড়েছিল, যার কারণ নিয়ে আলাদা কিছু বলার নেই। কিন্তু অভিভাবক এবং পড়ুয়ারদের সমর্থনের কারণে সেই বিরোধিতা ধোপে টেকেনি। অভিভাবকদের মতে, তাদের সন্তানরা যে একই জায়গায় এসে এতকিছু এখসঙ্গে শিখতে পারছে তাই যথেষ্ট এবং তা তাদের জন্য গর্বের ব্যাপার। এই বিভেদের দেশে, হানাহানির দেশে এই ঐক্যকে সত্যিই সাধুবাদ জানাতে হয়।