চলতি বছরের শুরুতেই ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছিলেন বাংলাকে বঞ্চিত করতে স্কুল পড়ুয়াদের মিড ডে মিলের কয়েক কোটি টাকাও আটকে রেখেছে কেন্দ্র। এফসিআইয়ের মাধ্যমে যে টাকা দেওয়া হয়, তা দিতে তারা গড়িমসি করছে মোদী সরকার। শুধুমাত্র মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগেই এখনও তা চালু আছে। এবার দেখা গেল কেন্দ্রীয় বঞ্চনা সত্ত্বেও রাজ্যের মিড ডে মিল কর্মসূচী শুধু চালুই নেই, মমতার উদ্যোগে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বাড়তি পড়ুয়াকে মিডে ডে মিল খাইয়ে দেশে নজির গড়েছে বাংলা।
জানা গেছে, প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিকে ২০১৮-’১৯ সালে রাজ্যের ১০২ শতাংশ ছাত্রছাত্রীকে মিড ডে মিল খাওয়ানো হয়েছে। কোনও রাজ্যই বাংলাকে টপকাতে পারেনি। ফলে এটি রেকর্ড বললেই চলে। সম্প্রতি প্রজেক্ট অ্যাপ্রুভাল বোর্ডের (প্যাব) বৈঠকে এই তথ্য দিয়ে জানিয়েছে কেন্দ্র। রাজ্যের এই কাজের প্রশংসাও করেছে তারা। ১০০ শতাংশ শিশুকে মিড ডে মিল খাওয়ানোর তালিকায় বাংলা বাদে আর হাতেগোনা কয়েকটি রাজ্যই আছে।
প্যাবের রিপোর্ট বলছে, রাজ্য গত আর্থিক বছরে প্রাথমিকে ৬৪ লক্ষ ৯৭ হাজার ৯৬৯ জন পড়ুয়াকে মিড ডে মিলের সুবিধা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল। কিন্তু আর্থিক বছর শেষে যে রিপোর্ট দিল্লীকে দেওয়া হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, রাজ্য সেই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছে। মোট ৬৭ লক্ষ ৫৩ হাজার ৯৪৭ জন (১০৪ শতাংশ) বাচ্চাকে সেই মিল খাওয়ানো হয়েছে। অন্যদিকে, উচ্চ প্রাথমিকের ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪২ লক্ষ ৩০ হাজার ৯৭৩ জন। সেখানেও ৯৮ শতাংশ সফল রাজ্য। মিড ডে মিল খাওয়ানো হয়েছে ৪১ লক্ষ ৩৭ হাজার ২৬৫ জনকে।
সব মিলিয়ে ওই শিক্ষাবর্ষে রাজ্যের ১ কোটি ৭ লক্ষ ২৮ হাজার ৯৪২ জন পড়ুয়া মিড ডে মিল খেয়েছে। শতাংশের নিরিখে তা ১০২। মিড ডে মিল খাওয়ানোয় এ রাজ্যের পরেই রয়েছে রাজস্থান। তারা ১০১ শতাংশ স্কুল পড়ুয়াকে মিড ডে মিল খাইয়েছে। তারপরেই আসাম (১০০ শতাংশ)। এর বাইরে আর কোনও রাজ্য ১০০ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি। মোদী রাজ্য গুজরাতও নয়। সেখানে ৯৮ শতাংশ পড়ুয়া মিড ডে মিল খেয়েছে। আবার কেরালায় প্রাথমিকের ক্ষেত্রে ১০১ শতাংশ হলেও, উচ্চ প্রাথমিকে তা ৯১ শতাংশ হয়েছে।