ফ্যাসিস্ট কায়দায় সংসদ চালানোর প্রতিবাদে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্যসভার অধ্যক্ষের কাছে স্মারকলিপি দিলেন বিরোধীরা। শুক্রবার বিকালে কংগ্রেস, তৃণমূল, টিডিপি, সপা-সহ প্রায় ১৫ টি বিরোধীদলের নেতা-নেত্রীরা এতে সাক্ষর করেছেন। ওই স্মারকলিপিতে সংসদের উভয় কক্ষে পেশ হওয়া বিলগুলিকে স্ক্রুটিনিতে পাঠানো থেকে সংশোধনের জন্য উপযুক্ত সময় দেওয়া-সহ একগুচ্ছ দাবি জানানো হয়েছে।
মোদী জামানায় পর্যাপ্ত নিরীক্ষণ না করেই অধিকাংশ বিল পাশ করানোর অভিযোগে সংসদেই সরব হয়েছে বিরোধীরা। এবার রাজ্যসভার স্পিকারকে লেখা চিঠিতেও এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন নেতা-নেত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, ২০০৪-২০০৯ সাল পর্যন্ত চর্তুদশ লোকসভায় ৬০ শতাংশ বিল পাশ হয় সংসদীয় কমিটির নিরীক্ষণের পর। এরপর দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারে সেই হার বেড়ে দাঁড়ায় ৭১ শতাংশ। অথচ মোদী জামানার প্রথম পাঁচ বছরে মাত্র ২৬ শতাংশ বিল কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। আর দ্বিতীয় মোদী জামানার সপ্তদশ লোকসভায় এখনও খাতা খুলতে পারেনি সরকার।

এমনকী বিল সংশোধনের জন্য উপযুক্ত সময় দেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা। এই প্রসঙ্গে তাঁরা লিখেছেন, ২২ জুলাই মানুষের অধিকার সংরক্ষণ বিল সংশোধনীর জন্য অধিবেশনে আলোচনার তালিকাভুক্ত ছিল। অথচ ওইদিন সকালে মৌখিকভাবে জানানো হয় বেলা ১২ টার মধ্যে বিলটি জমা দিতে হবে। কিন্তু এটা ‘রুল অফ প্রসিডুয়র অফ বিজনেস ইন দ্য কাউন্সিল অফ স্টেট’-এর ৯৫ নম্বর রুলের বিরুদ্ধে। এই রুলে সদস্যদের বিল সংশোধনের জন্য অন্তত একদিন সময় দেওয়ার কথা বলা আছে।’
সংসদের উপদেষ্টা কমিটি আসলে সময় ধার্য করা কমিটিতে পরিণত হয়েছে বলেও এই চিঠিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিরোধীরা। তাঁদের দাবি, সরকারের লক্ষ্যই হল যত বেশি সংখ্যক বিল পাশ করিয়ে নেওয়া। কারণ বিভিন্ন মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলি এখনও তৈরি হয়নি। ফলে বিল সংসদীয় কমিটিতে পাঠানোর দায়ও থাকছে না সরকারের।
একইসঙ্গে স্বল্প সময়ের আলোচনার জন্য পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হচ্ছে না অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা। স্মারকলিপিতে লিখেছেন, ‘১৭৬ ধারার অধীনে স্বল্পকালীন আলোচনায় সদস্যদের জরুরি গুরুত্বের বিষয়গুলি উত্থাপন করার অনুমতি দেওয়া হয়। প্রতি সপ্তাহে একটি সংক্ষিপ্ত সময়কাল পর্যন্ত আলোচনা করা হবে। বাজেট অধিবেশন চার সপ্তাহের মধ্যে, শুধুমাত্র দুটি স্বল্প সময়ের আলোচনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’