এ যেন কেঁচো খুঁড়তে কেউটে উঠে এল। বিজেপি কর্মীকে জেরা করতে গিয়ে খোঁজ মিলল একটা গোটা অস্ত্র কারখানার। সম্প্রতি দক্ষিন ২৪ পরগনা জেলার জয়নগর-মজিলপুরে আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি সমেত এক বিজেপি কর্মীকে আটক করে রাজ্য পুলিশ। তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল। সেই বিজেপি কর্মী কোথা থেকে ওই অস্ত্র পেয়েছিল, তা জানতে গিয়েই জেলার ক্যানিং থানার আমতলা এলাকায় পুলিশ এক অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়ে গেল। তার জেরে যেমন বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে তেমনি ওই অস্ত্র কারখানার মূল মাথাকেও গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে ক্যানিং থানার পুলিশ।
জানা গিয়েছে, ক্যানিং থানার আমতলা এলাকার শেখপাড়া থেকে বৃহস্পতিবার রাতে ওই অস্ত্র কারখানায় রেড করে পুলিশ। ক্যানিং থানার পুলিশ ও বারুইপুর জেলা পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের তদন্তকারী আধিকারিকরা আবু সিদ্দিক লস্করের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে এই অস্ত্র কারখানার হদিস পান। সেখান থেকে ১২টি ওয়ান শাটার, ৫টি লং রেঞ্জ পাইপগান সহ মোট ১৯টি বন্দুক ও ২২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে পুলিশ।
অস্ত্র উদ্ধারের পাশাপাশি অস্ত্র তৈরির প্রচুর সরঞ্জামও উদ্ধার করে পুলিশ। জানা গেছে, বাসুদেবকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে ক্যানিংয়ের এই অস্ত্র কারখানার সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। সূত্রের খবর, এমব্রয়ডারি কারখানার আড়ালে অস্ত্র তৈরির কারখানা চালাছিল আবু সিদ্দিক লস্কর নামে এক ব্যক্তি। পুলিশ সূত্রে খবর বছর তিনেক আগে একবার অভিযুক্ত আবু সিদ্দিক লস্কর ওরফে ঘোড়া সিদ্দিকের কাজ থেকে অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছিল পুলিশ। তার জন্য সে এক বছরেরও বেশি জেল খাটে। জেল খাটার পর সম্প্রতি ছাড়া পেয়ে সে নতুন করে আবার অস্ত্র কারখানা শুরু করেছিল।
গত রবিবার দক্ষিন ২৪ পরগনা জেলার জয়নগরে অস্ত্র সহ বাসুদেব কয়াল নামে এক বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর কাছ থেকে সেই সময় দুটি লং রেঞ্জের দোনলা বন্দুক ও ৪০টি কার্তুজ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। তাঁকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছিল জয়নগর থানা এলাকার দুর্গানগর এলাকায় স্থানীয় তৃণমূল কর্মী গৌতম ও উত্তম হালদারের একটি জমি দখল করার জন্য ওই এলাকারই বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী সত্যজিৎ কয়াল ও রূপনগরের বাসিন্দা বাবলু ও পরেশ তাঁকে দিয়ে এই আগ্নেয়াস্ত্র আনিয়েছিল। তাঁদের জন্যই ওই অস্ত্র এনে মজুত করেছিল বাসুদেব। পরে তা তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এর আগেই বাসুদেব ধরা পড়ে যায় পুলিশের হাতে।