লোকসভা নির্বাচনে বেলাগাম অর্থ খরচ হয়েছে বলে ভোটের পর থেকেই সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বরবার তাঁর অভিযোগ সব থেকে বেশি খরচ করেছে বিজেপি। অতীতে সরকারি খরচে নির্বাচনের কথাও বলেছেন তিনি। এবার এই ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সর্বদল বৈঠক ডাকার দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
মোদীকে পাঠানো ওই চিঠিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘দেশে বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দুর্নীতি ও অপরাধ রুখতে নির্বাচনী সংস্কারের দরকার হয়ে পড়েছে। বিষয়টি ২০১৪ ও ২০১৯ সালে আমাদের ইস্তাহারে ছিল। বিশ্বের ৬৫টি দেশের মতো এদেশেও নির্বাচনে অর্থের ব্যবস্থা করা উচিত ভারত সরকারের’।
‘নির্বাচনী খরচ ২০১৯’ শীর্ষক সেন্টার ফর মিডিয়া স্টাডিজের একটি রিপোর্ট উল্লেখ করে মমতা আরও লিখেছেন, ‘গত লোকসভা নির্বাচনই ছিল সবচেয়ে ব্যয়বহুল। ২০১৪ সালের চেয়ে দ্বিগুণ খরচ হয়েছে। সর্বনিম্ন ৬০ হাজার কোটি (৮.৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) টাকা খরচ হয়েছে ২০১৯ সালের ভোটে। সর্বোচ্চ খরচ তার অনেক বেশি হবে। ২০১৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে খরচ হয়েছিল ৬.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার’। এভাবে চলতে থাকলে ২০২৪ সালের নির্বাচনে খরচ ১ লক্ষ কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কাপ্রকাশ করেছেন মমতা।
নির্বাচনী খরচে রাশ না টানলে দুর্নীতি ঠেকানো যাবে না বলেও মনে করেন মমতা। তাঁর বক্তব্য, ‘নির্বাচন কমিশন প্রার্থীদের খরচের সর্বোচ্চ সীমা স্থির করে দিয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক দলের প্রচার খরচে কোনও লাগাম নেই’। মমতার দাবি, ‘৬৫টি দেশে রাজনৈতিক দলগুলিকে নির্বাচনী খরচ জোগান দেয় সরকার। অপ্রত্যক্ষভাবে খরচ জোগানো হয় ৭৯টি দেশে’।
জার্মানি, ফ্রান্স, ব্রিটেন, জাপান, ইতালি, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক, স্পেন, সুইডেনের মতো উন্নত দেশে রাজনৈতিক দলগুলি সরাসরি রাষ্ট্রের কাছ থেকে নির্বাচনী খরচ পায়। এমনকি উন্নতশীল দেশ আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো, ব্রাজিল, হন্ডুরাস, কলম্বিয়াও পায় সরাসরি অর্থ সহযোগিতা। তাই স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু ভোটের জন্য ভারতেও দরকার নির্বাচনী সংস্কার। এনিয়েই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার দাবি জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।