বাংলা এবং বাংলা ভাষার বঞ্চনার বিরুদ্ধে বারবারই গর্জে উঠেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হয়েছে অনেক প্রতিবাদ-বিক্ষোভও। তার জেরেই এল এবার এক বড় সাফল্য। চলতি মাসের ৪ তারিখ এক যুগান্তরকারী সিদ্ধান্ত নেয় সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের রায় এতদিন কেবল ইংরেজিতে দেখা গেলেও ৭টি আঞ্চলিক ভাষায় তা অনুবাদ করার সিদ্ধান্ত নেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। সেইমতো সর্বোচ্চ আদালতের তরফে ইংরেজি ছাড়াও আরও ৭টি ভাষায় সব রায় অনুবাদ করে দেওয়ার নির্দেশ জারি করা হয়।
কিন্তু অন্যান্য ৭টি আঞ্চলিক ভাষার ঠাঁই হলেও কোনও এক অজানা কারণে আশ্চর্যজনকভাবে বাদ পড়ে গিয়েছিল বাংলার নাম। যা নিয়ে সমালোচনার ওঠে ঝড়। ওই নির্দেশে বাংলা ভাষাকে কেন বাদ দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে রাজ্য বার কাউন্সিল। আদালতকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে অন্যান্য ভাষার সঙ্গে বাংলা ভাষাকেও অন্তর্ভুক্ত করার আর্জি জানান বরিষ্ঠ আইনজীবী ও রাজনীতিবিদরা। সেই আর্জিকে সমর্থন জানিয়েছিল তৃণমূলও।
সেই আবেদন জানানোর দু’সপ্তাহের মধ্যেই এবার তা গৃহীত হল। শীর্ষ আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, এবার থেকে বাংলা ভাষাতেও সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কপি দেখা যাবে। জানা গেছে, সুপ্রিম কোর্টের অ্যাপের মাধ্যমে ইংরেজি থেকে অনুবাদ করে এই রায় দেখানো হবে। সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলার শাসক দল, আইনজীবী, রাজনীতিবিদ-সহ সকল রাজ্যবাসী।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কপি ইংরেজিতে হওয়ার কারণে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিষয়গুলি অনেক সময়ই বুঝতে অসুবিধা হয়ে এসেছে বাদী এবং বিবাদী উভয় পক্ষের। আইনজীবীরা যা বুঝিয়ে এসেছেন, মামলাকারীরাও তাই বুঝে গিয়েছেন। এই নিয়ে ভ্রান্তিও বহুদিনের। এই কারণকে সামনে রেখে ৭টি আঞ্চলিক ভাষায় মামলার রায় তর্জমার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই ৭টি ভাষা হল, অসমিয়া, হিন্দি, কন্নড়, মারাঠি, উড়িয়া, তেলুগু ও তামিল ভাষায় ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত বাংলা ভাষাকেও স্বীকৃতি দিল শীর্ষ আদালত।