মোদী প্রথম জামানার পর দ্বিতীয়বারও সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে দিল্লীর মসনদে বসেছেন। কিন্তু তাঁর সরকারের আমলে ভারতীয় অর্থনীতিতে সব থেকে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এমনই তথ্য সামনে আসায় বেশ চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে দেশজুড়ে। পরিসংখ্যান বলছে, গত পাঁচ বছরে ভারতের অর্থনীতিতে এমন মন্দা আগে কখনও দেখা যায়নি। দ্বিতীয় মোদী সরকারের প্রথম ৫০ দিনেই প্রায় ১২ লক্ষ কোটি টাকা হারাল দালাল স্ট্রিট। মাথায় হাত বিনিয়োগকারীদের।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফেরার পর বাজেট অধিবেশনে ভারতের অর্থনীতিকে ৫ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা রেখেছিল মোদী সরকার। শুধু তাই নয়, চলতি বছরেই অর্থনীতিকে ৩ ট্রিলিয়ন ডলারে নিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করে বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের আশার আলো দেখিয়েছিল এনডিএ সরকার। কিন্তু বিনিয়োগকারীদের সমস্ত প্রত্যাশা মাটি হয়ে গিয়েছে। ভোগ, বেসরকারি বিনিয়োগ, রপ্তানি– সবক্ষেত্রেই মন্দা দেখা দিয়েছে। চলতি বছরের মার্চ মাসে চীনের কাছে বিশ্বের দ্রুততম ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির তকমা হারিয়েছে ভারত। মার্চ মাসে ত্রৈমাসিক আর্থিক বৃদ্ধির হার ৫.৮ শতাংশে গিয়ে ঠেকেছে। যা গত পাঁচ বছরে সবচেয়ে কম।
সামগ্রিক ব্যয়ের বৃহত্তম উপাদান ব্যক্তিগত খরচ। ২০১৮–১৯ অর্থবর্ষে ব্যক্তিগত খরচের পরিসংখ্যানেও ঘাটতি দেখা গিয়েছে। চলতি অর্থবর্ষে পেট্রোলিয়াম জাতীয় পণ্য ভোগের হার কমে ২.৬৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। যেখানে ২০১৭–১৮ অর্থবর্ষে সেই হার ছিল ৫.৯ শতাংশ। মার্চ মাসে ত্রৈমাসিক আর্থিক বৃদ্ধির হার অনুসারে ভোগ্যপণ্য ১৩.৬ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। যা ডিসেম্বরের তুলনায় ২.৩ শতাংশ কম। চলতি অর্থবর্ষে যাত্রীবাহি গাড়ির ওপর খরচ বৃদ্ধির হারও কমে গিয়েছে।
সব মিলিয়ে এমন পরিস্থিতি ভারত আগে কখনও দেখেনি। বিশেষজ্ঞদের মতে, যেখানে লক্ষ্যমাত্রা এতটাই বড় সেখানে অর্থনীতির এমন হাল কখনই কাম্য নয়। এইভাবে মোদী সরকার যেন ‘প্রতিশ্রুতি’র সরকার হয়ে উঠছে। মোদী সরকারের প্রতিশ্রুতি কাজে প্রতিফলিত হতে ব্যর্থ হচ্ছে বলে মনে করছেন বিভিন্ন মহল।