২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার আগে যে ‘প্রতিশ্রুতি’ গুলি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, তার মধ্যে অন্যতম ছিল ‘উজ্জ্বলা যোজনা’। যাতে দেশের সব মানুষের কাছে রান্নার গ্যাসের সুবিধা পৌঁছে দেওয়া যায়। তবে বাস্তবে সেই প্রকল্প তো বাস্তবায়ন হয়ইনি, উল্টে এই সুযোগে ব্যাপক টাকার দুর্নীতি হয়েছে। এই কারণেই কেন্দ্রীয় উজ্জ্বলা প্রকল্পের হিসেব চেয়ে একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে সরব হয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়েছিলেন, ব্লকে ব্লকে বুথে বুথে বিজেপির কাছ থেকে কালো টাকা ফেরত চাইতে হবে। সেটাই তাঁদের আন্দোলন।
দলনেত্রীর সেই নির্দেশকে মান্যতা দিয়েই উজ্জ্বলা প্রকল্প নিয়ে কর্মসূচী নিয়েছে জেলা তৃণমূল। সেই কাজে দলীয় নেতা-কর্মীরা বাড়ি বাড়ি যাবেন। এই মর্মে একটি নির্দেশিকা জারি করেছেন শাসক দলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা নেতৃত্ব। তাতে বলা হয়েছে, ‘উজ্জ্বলা যোজনার গ্যাস পাইয়ে দেওয়ার নাম করে বিজেপি নেতাদের ব্যাপক দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিটি পরিবারে খবর নিয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত বিজেপি নেতাদের খুঁজে বার করতে হবে।’ আসলে আন্দোলন আর জনসংযোগ- এক ঢিলে দুই পাখি মেরে নড়বড়ে ভিত মজবুত করতে চাইছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সেই জন্য উজ্জ্বলা যোজনার দুর্নীতি খুঁজতে বাড়ি বাড়ি অভিযান চালাতে চলেছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার তৃণমূল নেতারা।
জানা গেছে, শুরুতে গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটরের সঙ্গে যোগাযোগ করে এলাকার উজ্জ্বলা প্রকল্প প্রাপকদের তালিকা তৈরি হবে। তার সঙ্গে মিলিয়ে কোন এলাকায় কোন বিজেপি নেতা-কর্মীর ‘প্রভাব’ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখবেন এলাকার তৃণমূল নেতারা। সংশ্লিষ্ট বিজেপি নেতা উজ্জ্বলা প্রকল্পের ক্ষেত্রে কতটা কী ‘প্রভাব’ খাটিয়েছেন, তা যাচাই করবেন তাঁরা। তার পরে এলাকার প্রাপকদের বাড়িতেও সরাসরি যেতে পারেন শাসক দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। সেখানে গিয়ে প্রয়োজনীয় নথিপত্র সংগ্রহ করবেন তাঁরা। নথিগুলি তৈরির জন্য একটি ‘ফর্ম্যাট’ বা রূপরেখাও তৈরি করা হচ্ছে বলে জেলা তৃণমূল সূত্রের খবর।
উজ্জ্বলা প্রকল্প-কেন্দ্রিক কর্মসূচির মাধ্যমে বিজেপির দুর্নীতি যেমন প্রকাশ্যে আনা যাবে, তেমনই তৈরি হবে জনসংযোগ। সেই জন্য বাড়ি বাড়ি খোঁজখবরের কর্মসূচী নেওয়া হয়েছে বলে জানাচ্ছেন জেলা তৃণমূল নেতাদের একাংশ। একই সঙ্গে ওই কর্মসূচীর শেষে সোশ্যাল মিডিয়ায় তার ‘আপডেট’ দেওয়ার জন্যও স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীদের কাছে নির্দেশও পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।