পেটে ১ সপ্তাহ ধরে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন রামপুরহাটের এক তরুণী। ব্যথার কারণ খুঁজতে গিয়ে সিটি স্ক্যান করেন চিকিৎসকেরা। আর তাতেই বড় চমক! পাকস্থলীতে ভর্তি ধাতব জিনিসপত্র-গয়না-মুদ্রা! তৎক্ষণাৎ অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন রামপুরহাট সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। অস্ত্রোপচার করার সময়ে পেট কাটতেই চক্ষু চড়কগাছ তাঁদের! পেটে গিজগিজ করছে গলার হার, কানের, দুল, ঘড়ির চেন, লকেট, কয়েন! খিদে পেলেই খেত গয়না। শুধু গয়না নয়, খাবারের তালিকায় ছিল কয়েন, সোনার বালা, আংটি, কানের দুল, গলার চেন সহ আরও অনেক গয়না।
চিকিৎসকদের হতবাক দশা তখন! পেট তো নয়, যেন গয়নার দোকান! নানা আকারের অসংখ্য গয়নায় ভর্তি তাঁর পাকস্থলী! কঠিন অস্ত্রোপচারের পরে এক এক করে সেগুলো পেট থেকে বার করে আনতে সফল হন ডাক্তাররা। অস্ত্রোপচার শেষে টেবিলে সাজিয়ে রাখা হয় ১ কেজি ৬৮০ গ্রাম গয়না!
সূত্রের খবর, বীরভূমের মাড়গ্রাম থানার বিনোদপুর গ্রামের বাসিন্দা, রুনি খাতুন নামের বছর একুশের ওই তরুণী মানসিক ভাবে ভারসাম্যহীন। পেটে ব্যথার কারণে সাত দিন আগে তাঁকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন তরুণীর বাড়ির লোকজন। সেখানেই পরীক্ষা-নিরিক্ষা হওয়ার পরে তাঁর পেটে অস্ত্রোপচার করেন হাসপাতালের চিকিৎসক সিদ্ধার্থ বিশ্বাস। বার করে আনেন সব গয়না।
ডক্টর বিশ্বাস জানিয়েছেন, প্রথমে এক্স-রে করে ধাতব জিনিসপত্র আছে বলে দেখা যায় রোগীর পেটে। তার পরে করা হয় সিটি স্ক্যান। তখনই দেখা যায় এত পরিমাণে গয়না রয়েছে পেটে। তিনি বলেন, “রোগীর হিমোগ্লোবিন ছিল চার। অপারেশন করা সম্ভব ছিল না এই অবস্থায়। পাঁচ ইউনিট রক্ত ও আরও ওষুধ দিয়ে প্রথমে স্থিতিশীল করা হয় প্যারামিটারগুলি। তার পরে আজ সকালে চার জন মিলে দেড় ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার করে রীতিমতো তাজ্জব হয়ে যাই!”
চিকিৎসকের দাবি, রোগিণীর পেটে ৬০টি কয়েন, সোনা ও রুপোর আংটি, চেন, নূপুর, কানের দুল, লকেট– এই সব পাই। সমস্তটা বার করতে রীতিমতো বেগ পেতে হয় সার্জেনদের। কোনও কোনও গয়না বার করতে সাহায্য নেওয়া হয় ম্যাগনেটেরও। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এখন সুস্থ আছেন তরুণী।