আজব কান্ড নির্বাচন কমিশনের। যার জেরে প্রশ্ন উঠে গেল কমিশনের ভূমিকা নিয়ে। কিভাবে এইরকম কান্ড ঘটনাতে পারে নির্বাচন কমিশনের মতো একটি সংস্থা, তাতেই হতবাক সাধারণ মানুষ থেকে বিশেষজ্ঞরা। প্রসঙ্গত, গত লোকসভা ভোটে ডিউটি করার নির্দেশ দিয়ে জেলা প্রশাসন মারফত এক পুরকর্মীর বাড়িতে চিঠি পাঠিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু ভোটে ডিউটি না করায় শেষপর্যন্ত শোকজের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় যাঁকে শোকজ করেছে কমিশন, সেই ব্যক্তি লোকসভা ভোটের আগেই মারা গিয়েছেন।
পুরসভার দাবি, উপযুক্ত প্রমাণ-সহ চিঠি দিয়ে ওই পুরকর্মীর মৃত্যু খবর অনেক আগেই কমিশনে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ঘটনায় শোরগোল পড়েছে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায়। ওই শহরের গোয়ালপাড়ায় থাকতেন দেবাশিস ঘোষ। পুরসভার মজদুর বিভাগের কর্মী ছিলেন তিনি। লোকসভা ভোটের মুখে গত ১২ মার্চ মারা যান দেবাশিসবাবু। কাটোয়া পুরসভা সূত্রে খবর, তাঁর মৃত্যুর কিছুদিন পরেই পুরসভার ১৯ জন কর্মীকে ভোটে ডিউটি করার জন্য চিঠি পাঠায় নির্বাচন কমিশন। সেই তালিকায় নাম ছিল দেবাশিস ঘোষেরও। তৃতীয় পোলিং অফিসারের দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি।
পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, উপযুক্ত প্রমাণ-সহ দেবাশিসবাবুর মৃত্যুর খবর নির্বাচন কমিশনকে জানান কাটোয়া পুরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসার। ওই পুরকর্মীরা নাম ভোটের ডিউটি তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার আবেদনও জানানো হয়। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। কাটোয়া পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পুরসভা থেকে মৃত্যুর খবর জানানোর পরেও দেবাশিস ঘোষের নামে ভোটের প্রশিক্ষণে যোগ দেওয়ার চিঠি এসেছিল। এমনকী, পারিশ্রমিকের টাকাও জমা পড়েছিল অ্যাকাউন্টে। সেই টাকা ফেরত দেওয়ার পর আবার মৃতের নামে একাধিকবার শোকজের চিঠি পাঠিয়েছে কমিশন!’
জানা গিয়েছে, গত সোমবার ফের শোকজের চিঠি পেয়েছেন মৃত দেবাশিস ঘোষের পরিবারের লোকেরা। চিঠিতে আগামী ৩১ জুলাই সকাল ১০টা মধ্যে তাঁকে জেলা নির্বাচনী আধিকারিকদের দপ্তরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। হাজিরা না দিলে দেবাশিস ঘোষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ঘটনাটি জানাজানিতে হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে কাটোয়ায়। কিভাবে এমন কাজ করতে পারে কমিশন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে।