একই বিশ্বকাপে বা একই টুর্নামেন্টে ৬০০-এর ওপর রান সংগ্রহকারীর তালিকায় শচীন টেন্ডুলকার এবং ম্যাথু হেডেন ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। এতদিন তাঁরাই রাজ করছিলেন ছয়’শ রানের ক্লাবে। কিন্তু এবছরের বিশ্বকাপে একবারে পর পর তিনজন ব্যাটসম্যান ছয় শতাধিক রান সংগ্রহ করে তাঁদের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন। প্রথম দুজনের পর এই আসরে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ছয়’শ রানের ক্লাবে যোগ দিয়েছিলেন বাংলাদেশের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এরপর ভারতের ওপেনার রোহিত শর্মা এবং অস্ট্রেলীয় ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ছয়’শ রানের মাইলফলক অতিক্রম করেন। একনজরে জেনে আসা যাক বিশ্বকাপের এক আসরে ছয় শতাধিক রান করা ব্যাটসম্যানদের সম্পর্কে।
শচীন তেন্ডুলকার – ৬৭৩ রান (২০০৩ সাল)
কপিল দেবের হাত ধরে ১৯৮৩ সালে ভারত প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠে। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ফাইনাল ম্যাচেই জয়লাভ করে শিরোপা জেতে ভারত। নিজেদের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলতে ভারতকে অপেক্ষা করতে হয় ২০০৩ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত। আফ্রিকা মহাদেশে অনুষ্ঠিত এই বিশ্বকাপে ভারতের ফাইনাল খেলার স্বপ্ন পূরণ করতে বড় ভূমিকা পালন করেন শচীন তেন্ডুলকার। তিনি সেইবছর ১১ টি ইনিংসে একটি শতরান এবং ছয়টি অর্ধশতরানের সাহায্যে ৬১.১৮ ব্যাটিং গড়ে ৬৭৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন।
পুরো আসরে দুর্দান্ত ব্যাটিং করা শচীন তেন্ডুলকার ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র চার রান করে ফিরে গিয়েছিলেন। এছাড়া পুরো আসর জুড়েই তিনি অসাধারণ ব্যাটিং করেছিলেন। তার ছয়টি অর্ধশতকের মধ্যে দুটি ছিল ৯৮ এবং ৯৭ রানের ইনিংস। নিজে শতরান হাঁকাতে না পারলেও দলের জয় নিশ্চিত করেছিলেন তিনি। ভারত ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে শুধুমাত্র অস্ট্রেলিয়ার কাছেই পরাজিত হয়েছিল। গ্রুপ পর্বে এবং সুপার সিক্সের নয় ম্যাচের মধ্যে শুধুমাত্র অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেই পরাজিত হয়েছিল তাঁরা।
ম্যাথু হেডেন – ৬৫৯ রান (২০০৭ বিশ্বকাপ)
অস্ট্রেলিয়া ১৯৯৯ সাল এবং ২০০৩ সালে টানা দুই বিশ্বকাপ জয়ের পর প্রথম দল হিসেবে হ্যাটট্রিক বিশ্বকাপ জয়ের মিশনে ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যায়। শেষপর্যন্ত অসাধারণ দলগত নৈপুণ্যে ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে টানা তিনবার বিশ্বকাপ জয়ের কীর্তি গড়েছিল তাঁরা। বল হাতে গ্লেন ম্যাকগ্রা এবং ব্যাট হাতে ম্যাথু হেডেন পুরো আসরে দুর্দান্ত নৈপুণ্য প্রদর্শন করেছিলেন। হেডেন ১০ ইনিংসে তিনটি শতরান এবং একটি অর্ধশতরানের সাহায্যে ৭৩.২২ ব্যাটিং গড়ে ৬৫৯ রান সংগ্রহ করেছেন।
ম্যাথু হেইডেন ২০০৭ সালের বিশ্বকাপের আগে নিজের শেষ ওয়ানডে ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অপরাজিত ১৮১ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। এরপর বিশ্বকাপেও রানের মধ্যে ছিলেন তিনি। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৬০ রানের ইনিংস দিয়ে বিশ্বকাপের মিশন শুরু করেছিলেন তিনি। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১০১ রান, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৫৮ রান এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১০৩ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। ফাইনালে অবশ্য তিনি ছিলেন নীরব দর্শক। গিলক্রিস্টের সাথে উদ্বোধনী উইকেট জুটিতে ১৭২ রান যোগ করেছিলেন, যার মধ্যে তার অবদান ছিল মাত্র ৩৮ রানের।
রোহিত শর্মা – ৬৪৮ রান (২০১৯ বিশ্বকাপ)
এই তালিকায় দ্বিতীয় ভারতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে নাম লিখিয়েছেন রোহিত শর্মা। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে নিজের সময়ের সেরা ওপেনার রোহিত শর্মা ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের যাত্রা শুরু করেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচজয়ী অপরাজিত ১২২ রানের ইনিংস খেলার মধ্য দিয়ে। এরপরের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৫৭ রানের ইনিংস খেলার পর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৪০ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১ রান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৮ রান করে ফিরে গেলেও গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ তিন ম্যাচে তিনটি শতক হাঁকান তিনি। রোহিত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১০২ রান, বাংলাদেশের বিপক্ষে ১০৪ রান এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১০৩ রানের ইনিংস খেলেছিলেন।
গ্রুপ পর্বে মোট ৬৪৭ রান সংগ্রহ করার পর তার সামনে সুযোগ ছিল স্বদেশী শচীনের এক আসরে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড টপকানোর। কিন্তু সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ১ রান করে সাজঘরে ফিরে যান। তাঁর বিদায়ের পরেই ভারতের টপ-অর্ডার তাসের ঘরের মতো দ্রুত ভেঙে পড়ে। ফলে সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হয় ভারতকে। কিন্তু রোহিত শর্মা ৮১.০০ ব্যাটিং গড়ে ৬৪৮ রান করে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হিসেবে নিজের নাম লিখিয়ে ফেলেন এই ক্লাবে।
ডেভিড ওয়ার্নার – ৬৪৭ রান (২০১৯ বিশ্বকাপ)
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে এক বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে বিশ্বকাপের আগে দলে ডাক পান ডেভিড ও…