ভরা শ্রাবনেও ইলিশের আকাল। ফলে মাথায় হাত ব্যবসায়ীদের। দিঘা বেড়াতে গিয়ে হোটেলে ইলিশের চাহিদাপূরণ করতে চাইলেও ইলিশের আকালে সে আশা পূরণের চান্স কম। তাই মন ভার করেই বাঙালি পর্যটকরা সৈকত শহর ছাড়ছেন। শ্রাবণেও সেভাবে বৃষ্টির দেখা নেই। এই পরিস্থিতিতে দিঘা মোহনার মৎস্যজীবীরা আবহাওয়ার এই খামখেয়ালিপনাকেই দুষছেন। তবে দিঘা-শংকরপুর ফিসারম্যান অ্যান্ড ফিস ট্রেডার্স সংগঠনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস জানালেন অন্য কথা। তিনি বলেন, “তিন দেশ এক হয়ে যদি নিয়ম মেনে মাছ ধরে তাহলে তিন দেশের মৎসজীবীরাই ভীষণ উপকৃত হবেন। বাংলাদেশ যখন মাছ ধরা বন্ধ রাখে তখন দেখা যাচ্ছে বাকি দু’টি দেশ মাছ ধরছে। আবার যখন ভারতের সমুদ্রে মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়, তখন দেখা যায় বাকিরা মাছ ধরছে। কিন্তু, তিন দেশ একই সময়ে মাছ ধরা বন্ধ রাখলে। নিয়ম মেনে চললে তাহলে সব দেশই উপকৃত হবে”।
যেভাবে দিন-দিন প্রকৃতির বদল ঘটছে তাতে মৎসজীবীদের জালে ধরা পড়তে সমুদ্রের রুপোলি শস্যের এখনও দিন পনেরো সময় লেগে যাবে। আসলে পূবালী হাওয়া ও ঝিরঝিরে বৃষ্টি না হলে সমুদ্রে ইলিশ পাওয়া মুশকিল বলেই মনে করেন মৎস্য ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যেই ভারত, বাংলাদেশ ও মায়ানমার এই তিন দেশের মৎস্যজীবী সংগঠন সমুদ্রে মাছ ধরার বিষয়ে আলোচনায় বসেছিল। সেখানে নিজেরাই দাবি তোলে, ৬১ দিনের পরিবর্তে ১২০দিন সমুদ্রে মাছ ধরা বন্ধ করতে হবে। এই ১২০ দিন বাংলাদেশ, ভারত ও মায়ানমার একসঙ্গেই মাছ ধরা বন্ধ রাখবে। তাহলেই সমুদ্রে মাছের জোগান বাড়বে। যদিও মৎস্যজীবী সংগঠনগুলি নিজ নিজ সরকারের কাছে এবিষয়ে জানাবে বলেই সিদ্ধান্ত হয়।
সমুদ্রে ইলিশ না ওঠায় শ্রাবণের শুরুতে ভোজনরসিক মধ্যবিত্ত বাঙালি এখনও ইলিশ পাতে তুলতেই পারেনি। অন্যদিকে সমুদ্রে যাওয়া ট্রলারগুলি ইলিশ ধরতে না পারায় খরচের টাকা বহন করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ট্রলার মালিকদের। তবে শুধু ইলিশ নয়, এবারের মরশুমে পমফ্রেট-সহ অন্যান্য মাছের জোগানও অনেকটাই কমেছে। ফলে প্রতিনিয়ত চিন্তা বেড়ে চলেছে ব্যবসায়ীদের।