গেরুয়া শিবির সাধারণ মানুষের জন্যে কখনও কোনও কাজই করে না, উলটে বছরভর সন্ত্রাসের আবহ সৃষ্টি করে রাখে গোটা বাংলা জুড়ে যার জেরে ব্যাহত হয় মানুষের জীবনযাত্রা। বিজেপির রোষের বলি হয়ে নিত্যদিন প্রাণ হারান বহু মানুষ। এবার বিজেপি কর্মীর মা-বাবাই তাঁদের সন্তানের রোষের বলি হলেন। বয়স্ক বাবা-মাকে মারধরের অভিযোগ উঠল এক বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনা রীতিমত চাঞ্চল্য ফেলে দিয়েছে চারপাশে।
অত্যন্ত নিন্দনীয় এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের বড়নীলপুর উত্তরপাড়া এলাকায়। বিষয় সম্পত্তি জোর করে আগেই দখল নিয়েছে অত্যাচারী ছেলে ও বউমা। এরপর প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ বাবা–মাকে মারধর করে ওই বিষয় সম্পত্তি লিখিয়ে নিতে অত্যাচার শুরু করেছে তারা। অসহায় বৃদ্ধ বাবা–মাকে খেতে–পরতে দিচ্ছে না বলে বিজেপি কর্মী ছেলে ও বউমার বিরুদ্ধে জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ বাবা সন্তোষ চক্রবর্তী ও মা আরতিদেবী। বিবাহিতা মেয়ে পাপিয়া মৌলিককে সঙ্গে নিয়ে সোমবার জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানান তাঁরা।
ছেলে ও ছেলের বউয়ের অত্যাচারের বর্ণনা দিয়ে সন্তোষবাবু জানান, বাথরুমে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। ঘরের সামনে ভাতের ফ্যান সর্ষের তেল ফেলে রাখে। এভাবে তারা অত্যাচার শুরু করেছে বলে তাঁর অভিযোগ। তাঁর বক্তব্য, ‘আমার দুটি দোকানঘর আছে। সেই দোকানঘর থেকে ভাড়া তুলে দিয়ে আমার উপার্জন বন্ধ করে দিয়েছে। সেগুলি ছেলে ও ছেলের বউ দখল নিয়েছে। ফলে আমাকে অনাহার–অর্ধাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে। খাওয়া–পরার খরচ চাইতে গেলে আমাকে ও স্ত্রীকে ছুরি নিয়ে খুন করার হুমকি দেয়। চেঁচামেচি করে লোক জড়ো করে কোনও রকমে প্রাণে বেঁচে আছি। ছেলে বলে, আমি এখন বিজেপি করি। আমি ইচ্ছা করলে লোক দিয়ে তোমাদের খুন করিয়ে দেব। আমাকে বাড়ি ছেড়ে দাও। না হলে আমাকে বিষয় সম্পত্তি লিখে দাও। তখন প্রাণ ভয়ে আমি আর আমার স্ত্রী দু’জনে বর্ধমান থানায় গিয়ে ছেলে ও ছেলের বউয়ের নামে এফআইআর দায়ের করেছি।’
অত্যাচারিত বৃদ্ধ আরও জানিয়েছেন, “‘গত চার বছর আগে ছেলে সন্দীপ অন্য বাড়ির বউকে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে আসে। ওই মহিলার একটি সন্তানও আছে। আমার বাড়িতে আমি এবং আমার স্ত্রী দু’জনেই থাকি। আমাদের দু’জনেরই হাত–পা ভাঙা। প্রতিবন্ধী আমরা। বৃদ্ধ বয়সে দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে আমার ছেলে ও ছেলের বউ বাড়িটি জোর করে দখল নিয়ে নিয়েছে। আমরা বুড়ো–বুড়ি একটি ছোট্ট ভাঙা ঘরে কোনও রকমে দিন কাটাচ্ছি। আমাদের খেতে দেয় না। উল্টে আমার বিষয় সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য আমাদের ওপর অত্যাচার শুরু করেছে।’ বর্ধমান থানার পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। এই ঘটনা ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল বিজেপির নীচ মানসিকতাকে।