রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করে বর্ধমান স্টেশনের নাম বদলের প্রস্তাবে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘নাম পরিবর্তন করতে গেলে আগে রাজ্য সরকারকে প্রস্তাব দিতে হবে এবং রাজ্য সরকারের ছাড়পত্র পেতে হবে। এরকম কোনও প্রস্তাব এখনও রাজ্য সরকারের কাছে আসেনি।’ নবান্নে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, এই সিদ্ধান্ত বিজেপি-র দলীয় সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, ‘কোনও রেল স্টেশনের নাম বদল করতে হলে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের অনুমোদন প্রয়োজন। গণতান্ত্রিক সরকারকে পদ্ধতি মেনে চলতে হয়। রাজনৈতিক দল আসবে, যাবে। গণতন্ত্র থাকবে। সংবিধান অনুসারে সরকার চলে, কোনও দলের লাইন অনুযায়ী নয়।’
গত শনিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং বিহার বিজেপি-র সভাপতি নিত্যানন্দ রাই স্বাধীনতা সংগ্রামী বটুকেশ্বর দত্তের মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর মেয়ে ভারতী বাগচীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফিরে বর্ধমান স্টেশনের নাম বদলের প্রস্তাব দেন তিনি।
আজকের পূর্ব বর্ধমান জেলার ওয়ারি গ্রামে ১৯১০ সালে বটুকেশ্বর দত্তের জন্ম। ভগৎ সিং ও অজয় ঘোষের সঙ্গে তৎকালীন হিন্দুস্তান রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যপদ গ্রহণ করেছিলেন বটুকেশ্বর দত্ত। ১৯২৯ সালে দিল্লীর ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে ভগৎ সিংয়ের সঙ্গে থেকে বোমা ছুঁড়েছিলেন তরুণ বাঙালি বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্ত। সংসদে জোড়া বোমা ফাটানোর পরও দর্শকাসন থেকে নড়েননি তাঁরা। গ্রেপ্তারের পর দুজনকে একই জেলে রাখার সাহস করেনি ব্রিটিশ সরকার। কালাপানির সাজা হয় বটুকেশ্বরের। তাঁকে আন্দামান সেলুলার জেলে স্থানান্তরিত করা হয়। কানপুরে পড়াশুনো করার সময় ভগৎ সিংয়ের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। পরে হিন্দুস্তান সোশ্যালিস্ট রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে যুক্ত হন। যতীন্দ্রনাথ দাসকে সংগঠনে এনেছিলেন বটুকেশ্বরই। বোমা বানানোয় দক্ষ ছিলেন যতীন দাস। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর স্ত্রী অঞ্জলিকে নিয়ে পাটনায় থাকতেন। ধরা পড়ে ক্যান্সার। তাঁকে দিল্লী নিয়ে যাওয়া হয়। ১৯৬৫ সালের ২০ জুলাই তাঁর মৃত্যু হয়।