আজ আমাদের মানে কলকাতার চিত্রসাংবাদিকদের একটা বড় আনন্দের দিন। আমাদের একটা ন্যায্য দাবী আজ স্বীকৃতি পেল। প্রেস ক্লাব, কলকাতার ৭৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ক্লাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে আমাদের অনুরোধ ও দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রেস ক্লাব, কলকাতার প্রেসিডেন্ট স্নেহাশিস শূর ও সেক্রেটারি কিংশুক প্রামাণিককে তিনি চিত্রসাংবাদিকদের ক্লাবের সদস্যপদ দিতে অনুরোধ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী আমাদের মত অবহেলিত চিত্রসাংবাদিকদের সমস্যা দূর করার জন্য যেভাবে এগিয়ে এসেছেন তার জন্য আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞ। তার এই ভূমিকার কথা কলকাতার অবহেলিত চিত্রসাংবাদিকরা চিরদিন মনে রাখবেন।
অনুষ্ঠানের ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তিনদিন আগে আমার বাড়িতে চিত্রসাংবাদিকরা এব্যাপারে কথা বলতে এসেছিলেন। আমি দেখলাম, পুরনো সকলেই আছেন। সারা ভারতবর্ষে চিত্রসাংবাদিকরা প্রেস ক্লাবের মেম্বার, কিন্তু আমার চিত্রসাংবাদিকরা এখানে মেম্বার নন। তার মতে, সারা ভারতবর্ষে যদি নিয়মটা থাকে, তাহলে এখানে তা করতে অসুবিধা কোথায়? তিনি বলেন, কিংশুক ও স্নেহাশিস এবং কমিটির অন্যান্য মেম্বারদের আমি খুবই পজিটিভ বলে মনে করি, ক্লাবের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে একটা অ্যামেন্ডমেন্ট করে তাদের মেম্বার করা হোক। কারণ, চিত্রসাংবাদিকদেরও কম ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়না।
সাংবাদিক ও চিত্রসাংবাদিকদের পেশাগত ও আর্থিক নিরাপত্তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী খুবই চিন্তিত। তিনি বলেন, হঠাৎ হঠাৎ একেকজনের চাকরি চলে যাচ্ছে, বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কাগজ ও চ্যানেল কিন্তু এর সঙ্গে যুক্ত মানুষেরা কী করবেন তা কেউ জানেনা। এসব নিয়ে তিনি ভাবছেন। নিজে ভাবার পাশাপাশি তিনি এটা নিয়ে আমাদেরও ভাবতে বলছেন। এটা সত্যি একটা দুশ্চিন্তার বিষয়। ক্লাব ও রাজ্য সরকার যদি যৌথভাবে এই সমস্যা সমাধানে কোন উদ্যোগ নিতে পারে তাহলে কর্মরত সাংবাদিকদের খুবই সুবিধা হয়।
আমরা আমাদের দাবিটুকু মুখ্যমন্ত্রী ও ক্লাব কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরেছিলাম। মুখ্যমন্ত্রী সে ব্যাপারে তার বক্তব্য জানিয়েছেন, বল এখন স্নেহাশিস ও কিংশুকদের কোর্টে, আশা রাখি তারা যুক্তিসঙ্গত সিদ্ধান্ত নিয়ে চিত্রসাংবাদিকদের দীর্ঘদিনের সমস্যা দূর করবেন। আমার মনে হয়, ক্লাবকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য চিত্রসাংবাদিকরাও একটা বড় শক্তি হতে পারেন। সারা পৃথিবী যখন ইনক্লুশন বা অন্তর্ভুক্তির রাস্তায় হাঁটছে তখন সাংবাদিকরাই বা তার ব্যতিক্রম হবেন কেন? অন্তর্ভুক্তি মানে হল একটা শক্তি। আমরা কেউই একা কোন কাজ সম্পন্ন করতে পারিনা। পেশাগত সমস্যা সমাধানে সাংবাদিক ও চিত্রসাংবাদিকরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একসঙ্গে এগোলে অনেক সমস্যার সমাধান সহজ হবে বলেই আমার বিশ্বাস। আশা করি, মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ ও আমাদের পেশাগত অসুবিধার কথা বিবেচনা করে ক্লাব কর্তৃপক্ষ বাস্তবসন্মত সিদ্ধান্ত নেবেন।
প্রেস ক্লাব, কলকাতা ৭৫ পেরলো, স্বপ্ন দেখি শতবর্ষপূর্তি উৎসবের আয়োজনে সাংবাদিকদের পাশাপাশি নিশ্চয় আগামী দিনের চিত্রসাংবাদিকরাও থাকবেন। তাদের আর দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়ে থাকতে হবেনা।
মতামত লেখকের ব্যক্তিগত