‘ভারতের অর্থনীতির কাঠামোয় ধরতে পারে মন্দার রোগ। দেশের নাগরিকদের মাথাপিছু আয়ও মাঝারি স্তরেই আটকে থাকবে।’ এমন মন্তব্য করে আগেও মোদী সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়েছিলেন তিনি। আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, আচ্ছে দিনের ঠেলায় দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হারে ধ্বস নামতে পারে বলে। এবার দ্বিতীয় মোদী সরকারের প্রথম বাজেট পরিসংখ্যান নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের অন্যতম সদস্য রথীন রায়।
প্রসঙ্গত, এ মাসের গোড়ায় পেশ করা তাঁর প্রথম বাজেটে রাজকোষ ঘাটতির পরিমাণ জাতীয় উৎপাদনের (জিডিপি’র) ৩.৩ শতাংশে বেঁধে রাখার অঙ্গীকার করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। কিন্তু, সেই আর্থিক সংযম সরকার কতটা মেনে চলতে পারবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন রথীন রায়। ২০১৯-২০ অর্থবছরে কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে সোমবার সরকারকে দেশের মূল আর্থিক কাঠামো নিয়ে একটি অন্তবর্তী শ্বেতপত্র প্রকাশ করার আর্জি জানান তিনি।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ পাবলিক ফিনান্স অ্যান্ড পলিসি’র ডিরেক্টর রথীন রায় বলেন, ‘পেশাদার অর্থনীতিবিদ হিসাবে আমার অনুমান, বাজেটে যে পরিমাণ কর আদায়ের লক্ষ্য স্থির করেছেন সীতারামন, বাস্তবে সেই পরিমাণ কর আদায় তিনি করতে পারবেন না। ফলে, রাজকোষ ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে সরকারকে হয় বাজেট বরাদ্দের চেয়ে বেশি পরিমাণ অর্থ ধার করতে হবে নতুবা ব্যয় বরাদ্দ কমাতে হবে। তবে সরকার যদি বাজেট লক্ষ্যমাত্রার বেশি ধার করে তবে গোটা অর্থনীতিতে তার প্রভাব পড়বে। আবার, ব্যয় কমালে তারও প্রভাব পড়বে।’
আন্তর্জাতিক বাজারে সরকারি ঋণপত্র বিক্রি করে বিদেশি মুদ্রায় অর্থ ধার করার যে পরিকল্পনা মোদী সরকার করেছে সে সম্পর্কেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন রথীন। তিনি বলেন, ‘বিদেশের বাজারে ঋণপত্র বিক্রি করে অর্থ ধার করাতে অনেক ঝুঁকি রয়েছে। এতে দেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষুন্ন হতে পারে। এ ব্যাপারে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর ওয়াই ভি রেড্ডির একটি মন্তব্য বিশেষ উল্লেখযোগ্য। তাঁর মতে, এটা করলে তা দেশের চিরস্থায়ী দেনায় পরিণত হবে। স্বাধীনতার পর সাত দশক পেরিয়ে গেলেও কেন কোনও সরকার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও ওই পথ মাড়ায়নি সেদিকটাও ভেবে দেখতে হবে।’