ফের বেজে উঠল ভোটের বাদ্যি। বাজিয়ে দিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। ভোট আসলে বিধানসভা ভোট। ‘এখন থেকেই লেগে পড়তে হবে। এখানে দলের মাটি জমাট। কিন্তু আলগা দেওয়া বা আত্মতুষ্টির ন্যূনতম জায়গা নেই।’ ব্যাখ্যা স্বপনবাবুর।
জেলায় লোকসভা ভোট শেষ হয়েছে ১২ মে। এই ভোটকে সামনে রেখে গোটা জেলায় চরকি পাক দিতে হয়েছে স্বপনবাবুকে। তাই নিজের বিধানসভা এলাকা পূর্বস্থলী দক্ষিণে সেভাবে সময় দিতে পারেননি। সেই খামতি পোষাতেই লোকসভা ভোটের ফল বিশ্লেষণের পাশাপাশি কাজ শুরু করে দিয়েছেন স্বপনবাবু। —কী কাজ? স্বপনবাবু ইতিমধ্যেই বেশ কিছু সভা করে ফেলেছেন। সেই সভাগুলিতে দলের কর্মী, সমর্থক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ ও মহিলারা তীব্র গরম উপেক্ষা করেও জড়ো হয়েছেন। বিদ্যানগর, নিমতলা বাজার, নান্দাইয়ের সভাগুলিতে স্বপনবাবু মূলত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাংলার বাস্তব উন্নয়নের ফিরিস্তি দিয়েছেন। আর নরেন্দ্র মোদীর উন্নয়ন যে কাগুজে, তার বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। তৃণমূলের নেতৃত্বে পঞ্চায়েত স্তরে কীভাবে, কতখানি উন্নয়ন পৌঁছে গিয়েছে, প্রকল্প, কর্মসূচি, উপভোক্তার পরিসংখ্যান ধরে ধরে বর্ণনা করেছেন।
তবে এই সভাগুলি যেন নিছক নির্বাচনী সভা না হয়ে ওঠে, সেদিকে সতর্ক স্বপনবাবু দলের স্থানীয় নেতা–কর্মীদের বুঝিয়েছেন, এখন থেকে ২০২১–এর ভোটের সভা বললে লোকে পাগল বলবে। মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ধারাবাহিক কর্মসূচি নিতে হবে। যেমন এখন এই তীব্র গরমে ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত সঙ্কট চলছে। তাই রক্তদান শিবিরের মাধ্যমে মানুষকে কাছে টানা যায়। স্বপনবাবু নিজে রক্তদান শিবিরগুলিতে হাজির হয়ে উৎসাহ দিচ্ছেন। কলকাতায় বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙারও প্রতিবাদ করেছেন এলাকার মানুষকে পাশে নিয়ে। স্বপনবাবুর সাফ কথা, ‘মানুষের জন্য ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করতে হবে। মানুষ প্রয়োজনে যাতে আমাদের পাশে পায়, সেই নিশ্চয়তা দিতে হবে। তা হলে ভোটের মুখে মানুষকে আর নতুন করে দল বা প্রতীক চেনানোর প্রয়োজন পড়বে না।’
আগামী বিধানসভা ভোটকে সামনে রেখে স্বপনবাবুর পরিকল্পনা, প্রথমে নিজের বিধানসভার প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকায় সভা করা। তার পর গোটা জেলাজুড়ে সেই পরিকল্পনার রূপায়ণ। এমন পরিকল্পনার কারণ, ‘বিজেপি এই রাজ্যে ধর্মের নামে যে সঙ্কীর্ণ রাজনীতি আমদানি করেছে, তাতে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত। তাই তাঁদের আশ্বস্ত করতে, তাঁদের পাশে থাকতে বছরভর কোনও না–কোনও কর্মসূচি নিতে হবে।’