হাসপাতালে গিয়ে সোনভদ্রের ঘটনায় আহতদের সঙ্গে দেখা করলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা তথা প্রধান জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েনের নেতৃত্বাধীন তৃণমূলের সাংসদীয় প্রতিনিধি দল। আহতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। তৃণমূলের তরফে আহতদের পরিবারকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে তৃণমূলের প্রতিনিধিদলকে দেখা করার অনুমতি দেয়নি যোগীর পুলিশ।
শনিবার দুপুরে ডেরেক ও’ব্রায়েনের নেতৃত্বাধীন তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে স্থানীয় বিএইচইউ ট্রমা সেন্টারে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে ২ মহিলা-সহ ৬ জন ভর্তি আছেন। মাথায় চোট নিয়ে এক মহিলার অবস্থা গুরুতর। তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন ডেরেক-সহ প্রতিনিধি দলের তিন সদস্য। কথা হয় চিকিৎসকদের সঙ্গেও।
তবে সোনভদ্র ঘটনায় আহতদের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি সহজে মেলেনি। নিহত আদিবাসীদের পরিবারগুলির সঙ্গে দেখা করার উদ্দেশ্যে শনিবার সকাল সাড়ে ৯ টা নাগাদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের নেতৃত্বে তৃণমূলের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল বারাণসী বিমানবন্দরে পৌঁছোয়। এরপরই নাটক শুরু করে যোগী রাজ্যের পুলিশ। বিমানবন্দর থেকে বেরনোর সময়ই তাঁদের আটক করে স্থানীয় প্রশাসন। ডেরেক ওব্রায়েন পুলিশকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আমাদের আটকাচ্ছেন কেন। পুলিশ কোনও কারণ জানায়নি। শুধু বলেছে, আমাদের ওপরতলা থেকে এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তখন ডেরেক জানান, সোনভদ্রের ঘটনায় যাঁরা আহত হয়েছেন, আমরা তাঁদের সঙ্গে দেখা করব। পরে সোনভদ্র গিয়ে মৃতদের পরিবারের সঙ্গেও কথা বলব। তাঁর কথায়, আমরা আহতদের সঙ্গে দেখা করতে চাই। তাতে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা হবে না। কারণ আমাদের প্রতিনিধি দলে খুব কম লোক আছে।
কিন্তু যোগীর পুলিশ আইন কানুনের তোয়াক্কা না করেই ডেরেকের নেতৃত্বাধীন তৃণমূলের সংসদীয় প্রতিনিধিদলকে আটকে দেয়। প্রতিবাদে বিমানবন্দরেই ধর্নায় বসে যান তৃণমূলের তিন সাংসদ। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর স্থানীয় জেলাশাসক তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন। ডেরেকের নেতৃত্বাধীন তৃণমূলের প্রতিনিধিদলকে জেলাশাসক জানান, উত্তর প্রদেশ পুলিশ তৃণমূলের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলকে এসকর্ট করে বিএইচইউ ট্রমা সেন্টারে নিয়ে যাবে। ঘটনায় আহত আদিবাসীরা সেখানে ভর্তি আছেন। তাঁদের সঙ্গে দেখা করবেন তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। কথা বলতে পারেন চিকিৎসকদের সঙ্গেও। এই সময় ডেরেক, ঘটনাস্থল অর্থাৎ সোনভদ্রে যেতে চান। কিন্তু অনুমতি মেলেনি।
প্রসঙ্গত, জমি দখলকে কেন্দ্র করে আদিবাসীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে মোট ১০ জনকে খুন করা হয় বুধবার। সেই ঘটনার পর থেকেই থমথমে উত্তর প্রদেশের সোনভদ্রের উভা গ্রাম। সোনভদ্রের ঘটনা নিয়ে যোগী সরকারের তীব্র সমালোচনায় সরব বিরোধীরা। শুক্রবার লোকসভায় বিষয়টি উত্থাপন করেন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়। সোনভদ্রের ঘটনাস্থলে দল পাঠানোর কথা ঘোষণা করে তৃণমূল। সেই মতো শনিবার উত্তর প্রদেশে গিয়ে যোগীর পুলিশের কাছে বাধা পান ডেরেক ও’ব্রায়েনের নেতৃত্বাধীন তৃণমূলের প্রতিনিধি দল।