উত্তর প্রদেশের সোনভদ্রে নিহত ও জখম আদিবাসী পরিবারগুলির সঙ্গে তৃণমূলের প্রতিনিধিদলকে দেখা করতে দিল না যোগীর পুলিশ। সোনভদ্রে যেতে দেওয়া তো দূরের কথা, বারাণসী বিমানবন্দরেই তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা তথা প্রধান জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন, আবীর বিশ্বাস এবং সুনীল মণ্ডলকে আটক করা হয়।
সোনভদ্রে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের নেতৃত্বে শনিবার সকাল সাড়ে ৯ টা নাগাদ তৃণমূলের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল বারাণসী বিমানবন্দরে পৌঁছোয়। বিমানবন্দর থেকে বেরনোর সময়ই তাঁদের আটক করে স্থানীয় প্রশাসন। ডেরেক ওব্রায়েন পুলিশকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আমাদের আটকাচ্ছেন কেন? পুলিশ কোনও কারণ জানায়নি। শুধু বলেছে, সর্বোচ্চ স্তর থেকে এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ডেরেকের কথায়, ‘তৃণমূলের সংসদীয় দলকে বারাণসী বিমান বন্দরে আটকে রাখা হয়েছে। আমি এডিএম এবং এসপিকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, আইনের কোন ধারায় আমাদের আটকাচ্ছেন? তাঁরা বললেন, ওপরমহল থেকে আমাদের কাছে এমনই নির্দেশ আছে। ডেরেক পুলিশকে বলেন, সোনভদ্রের ঘটনায় যাঁরা আহত হয়েছেন, আমরা তাঁদের সঙ্গে দেখা করব। পরে সোনভদ্র গিয়ে মৃতদের পরিবারের সঙ্গেও কথা বলব’। কিন্তু ভবি ভোলে নি।
এমন পরিস্থিতির প্রতিবাদে বিমানবন্দরের টারম্যাকেই ধর্না শুরু করেন তৃণমূলের তিন সাংসদ। প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে চলে ডেরেকদের ধর্না প্রদর্শন। কিন্তু জেলাশাসকের দেখা মেলেনি। উলটে পুলিশ বিমানবন্দর ছাড়ার জন্য তাঁদের জোর করতে শুরু করেন। তৃণমূল নেতাদের জানানো হয়, তাঁদের একটি বাতানুকূল গেস্ট হাউসে নিয়ে যাওয়া হবে। ডেরেক বলেছেন, আমাদের কোনও অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেখানে এয়ার কন্ডিশনড গেস্ট হাউসে আমাদের রাখা হবে। আমরা গেস্ট হাউসে যেতে চাইছি না। আমরা আহতদের সঙ্গে দেখা করতে চাই। তাতে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা হবে না। কারণ আমাদের প্রতিনিধি দলে খুব কম লোক আছে। কিন্তু যোগীর পুলিশ তৃণমূলের সংসদীয় প্রতিনিধিদলের কোনও কথা শোনেনি বলে জানিয়েছেন ডেরেক।
প্রসঙ্গত, যোগী রাজ্যে জমি দখলকে কেন্দ্র করে আদিবাসীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে মোট ১০ জনকে খুন করা হয় বুধবার। সেই ঘটনার পর থেকেই থমথমে উত্তর প্রদেশের সোনভদ্রের উভা গ্রাম। ঘটনায় সমবেদনা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ঘটনা নিয়ে যোগী সরকারের তীব্র সমালোচনায় সরব হয় বিরোধীরাও। শুক্রবার লোকসভায় বিষয়টি উত্থাপন করেন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়। সোনভদ্রের ঘটনাস্থলে দল পাঠানোর কথা ঘোষণা করে তৃণমূল।