তুলনা করা হচ্ছে সিরিয়ার সেই আয়লান কুর্দির সঙ্গে। বছর খানেক আগেই ভূমধ্যসাগরের তটে যার মৃতদেহ ভেসে উঠেছিল। এমনকী সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে রিও গ্রান্ডে নদীতে ভেসে ওঠা বাবা ও সেই ছোট্ট খুদের কথাও উঠছিল। এক কথায় বিহারের মুজাফফরপুরে বাগমতী নদীর জলে ভেসে মৃত্যু হওয়া তিন মাসের শিশু অর্জুনের নিথর দেহ দেখেই তোলপাড় হয়ে গিয়েছিল গোটা দেশ।
সোশ্যাল মিডিয়ার এক ভিডিও সূত্রেই উঠে এসেছিল, মর্মান্তিক সেই মৃত্যুর কথা। জানা গিয়েছিল, নদীর তীরে অর্জুনের মা তাঁকে এবং আরও তিন সন্তানকে নিয়ে বাসন মাজা, কাপড় কাচা ইত্যাদি ঘরের কাজ করতে গেলে নদীর স্রোত আচমকা বেড়ে যাওয়ায় প্রথমেই তলিয়ে যায় সে। তাকে বাঁচাতেই তৎক্ষণাত তিন সন্তান সমেত জলে ঝাঁপ দেন অর্জুনের মা। কিন্তু এক দিন কাটাতে না কাটতেই উঠে এল ভয়ঙ্কর তথ্য। ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্টের সূত্রে জানা গিয়েছে, জলে ডুবে মৃত্যু হয়নি অর্জুনের। তাঁর মা-ই তাকে খুন করেছে। অভিযোগ তেমনই। মুজফফরপুরের পুলিশ-প্রশাসনের দাবি, শিশুটির মা-ও সে রকমই বয়ান দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, ওই মহিলার আরও দুই সন্তান জলে ডুবে নিখোঁজ।
মুজফফরপুরের জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের দাবি, বন্যার জলে ভেসে গিয়ে মৃত্যু নয়, অর্জুনের মা তাকে খুন করেছে। মুজফফরপুরের জেলা শাসকের অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি মুজফফরপুরে হলেও এর সঙ্গে বন্যার কোনও যোগ নেই। জেলাশাসকের দফতর থেকে প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ওই মহিলার নাম রিনা দেবী। স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া হওয়ায় তিনি নিজের চার সন্তানকেই নদীর ধারে নিয়ে যান। চার শিশুকেই কার্যত জলে ছুঁড়ে দিয়ে নিজেও জলে ঝাঁপ দেন রিনা দেবী। স্থানীয়রা ওই মহিলা এবং তাঁর সাত বছরের এক মেয়েকে উদ্ধার করতে পারলেও বাকিরা নিখোঁজ ছিল। কিন্তু অর্জুন-সহ তিন জন জলে তলিয়ে যায়। পরে অর্জুনের দেহ উদ্ধার হলেও এখনও অন্য দুই শিশুর খোঁজ মেলেনি।