প্রথম মোদী সরকারের আমল বারবারই কেন্দ্রীয় বঞ্চনার শিকার হয়েছে এ রাজ্য। সেই ধারা বজায় রয়েছে মোদী সরকারের দ্বিতীয় ইনিংসেও। তাদের পেশ করা প্রথম সাধারণ বাজেটে বাংলার জন্য কোনও বিশেষ প্রকল্পের ঘোষণা তো হয়ইনি, বরং রাজ্যের বেশ কিছু চলতি প্রকল্পে বরাদ্দ শুন্য করে দেওয়া হয়েছে। এমনকী সাধারণ বাজেটের মতো রেল বাজেটেও বাংলায় ‘বঞ্চনা এক্সপ্রেস’ ছুটিয়েছে মোদী সরকার। এবার ঝাড়খণ্ডে ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া বিজেপি ফের বাংলার স্বার্থে আঘাত হানতে চলেছে।
জানা গেছে, পূর্ব রেলের পর এবার ডানা ছাঁটা হতে পারে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের। এমনকী, কলকাতা থেকে রাঁচিতে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সদর দফতর সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথাও ভাবছেন বিজেপি নেতারা। তবে এ বিষয়ে এখনও কোনও নির্দেশিকা আসেনি গার্ডেনরিচে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সদর দপ্তরে। জল্পনা চলছে। ৬৪ বছরের পুরনো রেল ভবনের কর্মীরাও দোটানায়। তাঁরা নিশ্চিত, সদর দফতর না বদলালেও নতুন জোন খুলতে পারে পীযূষ গোয়েলের রেলমন্ত্রক। আর তাতেই কমতে পারে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের লাভের গরিমা।
ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাসের দাবি, রেল জোনের সদর দফতর করতে হবে রাঁচিতে। ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠিও দিয়েছেন তিনি। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আয়ের মূল উৎস ঝাড়খণ্ড। লোহা, কয়লা বহন করে লাভের ঘর ভরিয়ে তুলছে দক্ষিণ-পূর্ব রেল। এই যুক্তিতে জোনাল সদর চাইছেন তিনি। সেইসঙ্গে রঘুবরের যুক্তি, তেলেঙ্গানা, ছত্তিশগড় বা উত্তরাখণ্ডের মতো নতুন রাজ্যগুলি নতুন করে রেল জোন পেলে, ঝাড়খণ্ড কেন পাবে না? তাঁর থেকেও এক কদম এগিয়ে বিজেপি সাংসদ সঞ্জয় শেঠ দাবি তুলেছেন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সদর দফতর কলকাতা থেকে সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে রাঁচিতে।
আসলে ঝাড়খণ্ডে মোদী জমানায় রেলের উন্নয়নকে বড় ইস্যু করতে চাইছে বিজেপি। শুরু হয়েছে সেই প্রচারাভিযানও। এখন ঝাড়খণ্ডের মানুষদের আবেগকে আরও সুড়সুড়ি দিতেই জোনাল হেড কোয়ার্টার নিয়ে টানাটানি করতে চাইছে বিজেপি। উল্লেখ্য, বর্তমানে নবগঠিত রেল ডিভিশন রাঁচি ছাড়া দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাতে রয়েছে খড়্গপুর, আদ্রা ও চক্রধরপুর। রাঁচির জন্য নতুন রেল জোন গঠিত হলে রাঁচি ছাড়াও আদ্রা ও চক্রধরপুর হারাতে পারে গার্ডেনরিচ। সবমিলিয়ে গার্ডেনরিচের রেল ভবনের ভবিষ্যৎ নিয়ে এখন জল্পনা তুঙ্গে।