বাংলার তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের আরও উন্নয়নে নবদিগন্তে তৈরি হবে একটি কেন্দ্র। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, অ্যানালিটিক্সের পাশাপাশি পড়ানো হবে অ্যানিমেশনও। সেখানে অ্যানিমেশন নিয়ে ৫০০ পড়ুয়া লেখাপড়া করতে পারবেন। শুক্রবার নিউ টাউনে এক অনুষ্ঠানে এ কথা জানান রাজ্যের শিল্প–বাণিজ্য, অর্থ এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অমিত মিত্র। তিনি আরও জানান, নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন প্রাইমের মতো সংস্থা বিভিন্ন অ্যানিমেশন স্টুডিও চুক্তি করছে বলে খবর পেয়েছি। রাজ্য চায় তারা কলকাতায়ও আসুক। এখানকার স্টুডিওগুলির সঙ্গে চুক্তি করুক।
পশ্চিমবঙ্গকে অ্যানিমেশন এবং ভিস্যুয়াল এফেক্টস-এর সেরা রাজ্যে পরিণত করতে চায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। শুক্রবার নিউটাউনের বিশ্ববঙ্গ কনভেনশন সেন্টারে ওই আশার কথা শুনিয়েছেন অর্থ ও শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র। তিনি বলেন, বণিকসভা ফিকির একটি রিপোর্ট বলছে, এদেশে আগামী তিন বছরে ভিস্যুয়াল এফেক্টস-এর বাজার হবে ১৩ হাজার ১৭০ কোটি টাকার। বৃদ্ধির হার ১৭.২ শতাংশ। আজকের দিনে ৩০০ অ্যানিমেশন স্টুডিও আছে। প্রায় ২০ হাজার শিল্পী তাতে কাজ করেন। নেটফ্লিক্স এবং অ্যামাজন প্রাইমের মতো সংস্থা যাতে পশ্চিমবঙ্গে এসে দেশীয় প্রযুক্তিতে অ্যানিমেশন তৈরি করে, আমরা সেই চেষ্টা করব।
এদিন ওয়েবেল ডব্লুকিউই অ্যানিমেশন অ্যাকাডেমির প্রথম ব্যাচের পড়ুয়াদের শংসাপত্র এবং চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। তাঁরা সবাই হায়দরাবাদের একটি সংস্থায় কাজ পেয়ে গেছেন। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব দেবাশিস সেন, আইলিডের চেয়ারম্যান প্রদীপ চোপড়া, হায়দরাবাদের ডিকিউ এন্টারটেনমেন্টের সিইও এবং সিএমডি তাপস চক্রবর্তী, অ্যাসেমব্লেজের সিইও এ কে মাধবন প্রমুখ।
তাপস চক্রবর্তী ওয়েবেল ডব্লুকিউই অ্যানিমেশন অ্যাকাডেমির প্রশংসা করেন। এই প্রসঙ্গে অমিতবাবু বলেন, ‘এই অ্যাকাডেমি সরকার চালায়। তাপসবাবু এই প্রতিষ্ঠানের প্রশংসা করেছে। বলা হচ্ছে এটি হায়দরাবাদের থেকেও ভাল। কলকাতায় যে প্রতিষ্ঠান তৈরি হয়েছে, তার প্রশংসা করছেন হায়দরাবাদের অন্যতম বড় একটি অ্যানিমেশন সংস্থা। আমরা গর্বিত। আশা করি কলকাতা অ্যানিমেশন হাব হিসেবে গড়ে উঠবে।’ তিনি বলেন, ‘বাঙালিদের ডিএনএতে সৃজন ক্ষমতা রয়েছে। তবে শুধু সেটা থাকলেই তো হবে না, সেটা বাইরে আনতে হবে। ওয়েবেল ডব্লুকিউই অ্যানিমেশন আকাদেমি থেকে ২৩ জন স্নাতক হয়েছেন। তাঁরা সবাই চাকরি পেয়ে গেছেন। এখন ৬৪ জন পড়ছেন। রাজ্যে নবদিগন্তে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের আরও উন্নয়নের জন্য একটি কেন্দ্র তৈরি করা হবে। সেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, অ্যানালিটিক্স নিয়ে পড়ানো হবে। পাশাপাশি সেখানে এক তলা, দরকার পড়লে দোতলায় অ্যানিমেশন পড়ানো হবে। প্রতি বছর ৫০০ জন সেখান থেকে স্নাতক হবেন। এখান থেকে তাঁরা বিএসসি ডিগ্রি পাবেন, দেবে ম্যাকাউট।’
অমিত মিত্র আরও বলেছেন, ‘ সুকুমার রায়ের আবোল তাবোল বইয়েই তার আভাস পাওয়া গিয়েছিল। আজ অ্যানিমেশনের উপর ভিত্তি করেই সিনেমা তৈরি হচ্ছে। বাহুবলী ওয়ান, বাহুবলী টু, ২.০ প্রভৃতি সিনেমা তৈরি হয়েছে অ্যানিমেশনের উপরে ভিত্তি করেই। আমরা চাই, আঞ্চলিক ভাষায় তা তৈরি হোক। বর্তমানে ২৩ জন ছাত্রছাত্রীর ডিকিউই এন্টারটেনমেন্টে চাকরি হয়েছে। ৬৪ জন বর্তমানে পড়ছে। আমরা চাই ৫০০ জন ছাত্রছাত্রী পড়ুক’।