নিজেদের তৈরি রেকর্ড ভাঙাটাই ফি বছর অভ্যাসে পরিণত করেছে ধর্মতলায় তৃণমূলের একুশে জুলাইয়ের শহিদ দিবসের সমাবেশ। আগামী কাল অর্থাৎ রবিবারের সভায় যোগ দিতে শুক্রবার সকাল থেকেই মহানগরে পাড়ি জামাতে শুরু করেছে ঘাসফুল সমর্থকরা। একদিকে রাজ্যের শাসক দলের সংগঠন, অন্যদিকে তিরানব্বইয়ের ১৩ শহীদের স্মৃতি তর্পণের স্বতঃস্ফূর্ত আবেগে ভর দিয়ে এবারে অতীতের রেকর্ড ম্লান করে দেবে জনজমায়েত। এমনই দাবি করা হয়েছে দলীয় নেতৃত্বের পক্ষে। হাওড়া, বিধাননগর ও কলকাতা-সহ মোট ছ’টি অস্থায়ী শিবিরে দূরবর্তী জেলা থেকে আগতদের থাকা-খাওয়ার অস্থায়ী ব্যবস্থা চালু হয়ে গিয়েছে। এদিন সরেজমিনে প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
লোকসভা ভোটের ফলাফলের পর বৃহদাকারে সব কর্মীর মুখোমুখি হচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুন লড়াই। কর্মীদের একজোট করে একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে ব্যালট ফেরানোর দাবিতে এবার বার্তা দেবেন মমতা। ইভিএমের বিরুদ্ধে ব্যালট ফিরিয়ে আনার লড়াইকে ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে কার্যত এক নতুন মাত্রায় নিয়ে যেতে যান তৃণমূল নেত্রী। লোকসভা ভোটের আগে দেশের সমস্ত বিরোধী দলের নেতাদের নিয়ে তিনি ব্রিগেডে যে সভা করেছিলেন সেখানে ইভিএমের বদলে ব্যালটে ভোটের দাবি তোলা হয়েছিল। লোকসভা ভোটের পর দেশজুড়ে বিরোধীদের সেই দাবি আরও জোরালো হয়েছে। ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্র তথা এপিকের দাবিতেই রাস্তায় নেমেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে ব্যালট ফেরতের দাবি তুলে তাঁর নতুন লড়াই সেই উচ্চতায় নিয়ে যেতে চান তৃণমূল নেত্রী। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, দলের কর্মীদের নেত্রী আন্দোলনকে সেই জায়গায় পৌছে দেওয়ার বার্তাই হয়তো দেবেন। ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ পরিদর্শনে এসে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘যেরকম স্বতঃস্ফূর্তভাবে নেত্রী ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে প্রত্যেকবার কর্মীদের উদ্দেশ্যে বার্তা দেন, সেভাবেই নতুন লড়াইয়ের বার্তা দেবেন’।
কলকাতার ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্র, গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম, উত্তীর্ণ এবং বড়বাজারের বিভিন্ন ধর্মশালায় জেলার বাসিন্দাদের থাকার জায়গা করা হয়েছে। এছাড়া বিধাননগরের সেন্ট্রাল পার্ক এবং হাওড়াতেও শিবির রয়েছে। শিয়ালদহ, হাওড়া ও কলকাতা স্টেশনে বুথ করা হয়েছে তৃণমূল স্বেচ্ছাসেবকদের। মুর্শিদাবাদ, মালদহ, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া থেকে এদিন রাতেই লোক ঢুকতে শুরু করেছে এইসব শিবিরে। রাজ্যের মন্ত্রী তাপস রায় বলেন, অতীতের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, প্রতি শিবিরেই যত মানুষের লক্ষ্যমাত্রা থাকে, বাস্তবে তা ছাপিয়ে যায়। তাই বাড়তি মানুষের খাবারের বন্দোবস্ত রাখতে হয়েছে এবারেও।