এর আগে কখনও উত্তর আয়ার্ল্যান্ডে হয়নি ব্রিটিশ ওপেন। ১৯৫১ সালের পর থেকে এই প্রথমবার স্কটল্যান্ডের বাইরে এই মিট হচ্ছে। রয়্যাল পর্টুসে যে মিটের অন্যতম সেরা আকর্ষণ টাইগার উডস এবং ঘরের ছেলে ররি ম্যাকলরয়ের মধ্যে ডুয়েল। গত এপ্রিলেই তাঁর ১৫তম মেজর জয় করেছেন টাইগার উডস, ‘অগাস্টা মাস্টার্স’-এ চ্যাম্পিয়ন হয়ে। এটাই ১১ বছর তাঁর কোনও মেজর ট্রফি। অন্য দিকে, গত পাঁচ বছর মেজর জেতেননি ররি ম্যাকলরয়ও। বৃহস্পতিবার শুরুর রাউন্ডেই যাঁর একটি দূরপাল্লার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে লাগে এক সমর্থকে মোবাইল ফোনে। ফোনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বলটি লাগে তাঁর পেটে। প্রথম রাউন্ড শেষে তাঁর যা পারফরম্যান্স, তাতে তাঁর এখন অবশ্য কাট পাওয়া কঠিন।
বৃহস্পতিবার ব্রিটেনের ঐতিহ্যপূর্ণ ‘দ্য ওপেন’ চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হল। টি অফের আগে ৪৩ বছরের টইগার উডস বলছেন, ‘এই বয়সে দ্য ওপেনে খেলার যোগ্যতা অর্জন করাটাই বিরাট ব্যাপার। কিন্তু, আমি এখানে খেলতে এসে সব সময়ই মনে করছি টম আর গ্রেগের কথা। টম যা করেছিল টার্নবেরিতে, গ্রেগ সেটাই করেছিল বির্কডালেতে।’ সঙ্গে জুড়ে দিলেন, ‘প্র্যাক্টিসের পর গল্ফ কোর্স দেখে মনে হচ্ছে এখানে বল খুব দ্রুত গড়াবে। আমি এই কোর্সে প্রথমবার খেলছি। দুর্দান্ত লাগছে।’ টাইগারকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত উত্তর আয়ার্ল্যান্ডের সমর্থকরাও। সমুদ্র সৈকতে বালুরাশিতে লিখে রাখা হয়েছে তাঁর নাম।
গল্ফ কেন, অন্য খেলা থেকেও উত্তর আয়ার্ল্যান্ডকে দীর্ঘ দিন ব্রাত্য করে রাখা হয়েছিল রাজনৈতিক টালমাটালের কারণে। প্রায় তিরিশ বছর ধরে এখানে রাজনৈতিক এবং আঞ্চল ভিত্তিক সংঘর্ষ হয়েছে। এর পর ১৯৯৮ সালে ‘দ্য গুডফ্রাইডে এগ্রিমেন্ট’ হয়। সেই চুক্তির হাত ধরে ধীরে ধীরে শান্তি ফিরে আসে। এই অঞ্চলে শাস্তি স্থাপনের জন্য ম্যাকলরয় খেলাধুলোর ভূমিকাকে বড় করে দেখতে চান।ঘরের কোর্সে এমন ঐতিহ্যপূর্ণ মিট নিয়ে আবেগ ম্যাকলরয়ের কণ্ঠে, ‘বিভিন্ন ধারার মানুষকে এক করার কাজে খেলাধুলোর ভূমিকা অপরিসীম। আমরা সবাই জানি, এই দেশে এমন টুর্নামেন্ট আরও বেশি হওয়া প্রয়োজন। এ দেশের মানুষের জন্য এটা আরও বেশি জরুরি। এই দেশে এমন বড়মাপের একটা মিট হওয়াটাই বলে দিচ্ছে, অতীত এবং বর্তমানের মধ্যে পরিস্থিতির ফারাক কতটা।’ তবে, ঘরের কোর্সে এই মিট বলে নিজেকে ফেভারিট ধরছেন না ম্যাকলরয়। বলছেন, ‘আমি উত্তর আয়ার্ল্যান্ডের মানুষ। আমি সত্যিই নিজের ঘরের কোর্টে খেলছি। তাই বলে আমি নিজে আকর্ষণের কেন্দ্রে এমনটা নয়। এই দেশ এবং গল্ফের জন্য এটা দুর্দান্ত একটা ব্যাপার।
গত ১১ বছরে একাধিক চোট-আঘাত পেয়েছেন টাইগার। একাধিক অস্ত্রোপচার হয়েছে তাঁর। একটা সময় ধরে নেওয়া হয়েছিল, তাঁর কেরিয়ার বোধ হয় শেষ। সেই খাদের কিনারা থেকে উঠে এসেছেন তিনি। এখানেই মিটের শেষে মুক্তি পেতে চলেছে টাইগারের জীবনধর্মী ছবি ‘টাইগার উডস: চেজিং হিস্ট্রি।’ টাইগারের জীবনের নানা ওঠাপড়া এবং প্রত্যাবর্তনের মুহূর্ত ধরা রয়েছে যে ছবিতে। পেশাগত জীবনে উডসের ৮১তম খেতাব জয়ের টুকরো সব মুহূর্তও রয়েছে। উডস বলছেন, ‘এপ্রিলে মাস্টার্সটা জিততে গিয়ে আমাকে বিপুল পরিশ্রম করতে হয়েছে। তখনও আমি ততটা ফর্মে ফিরতে পারিনি। এখানে দেখা যাক, কী রকম পারফর্ম করতে পারি। শুধু টাইগার ম্যাকলরয় নন, এখানে খেলছেন বিশ্বের প্রথম সারির সব গল্ফার। লি ওয়েস্টউড, সের্খিও গার্সিয়া, জাস্টিন রোজ, ডাস্টিন জনসনের মতো সব গল্ফার। সেই সঙ্গে ভারতের একমাত্র প্রতিনিধি শুভঙ্কর শর্মা।