দ্বিতীয় বারের জন্য মোদী সরকার ক্ষমতায় ফিরতেই ‘ভক্ত’দের ‘রামরাজ্যে’ পরিণত হয়েছে গোটা দেশ। উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, আসাম-সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ‘জয় শ্রীরাম’ হয়ে উঠেছে প্রহারের মন্ত্র। ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে আপত্তি জানালেই জুটছে ‘ভক্ত’দের হাতে বেধড়ক মার। তবে কম যায় না গোরক্ষকরাও। এবার গরু চোর সন্দেহে ফের তিনজনকে পিটিয়ে মারল গোরক্ষকরা।
এবার ঘটনাস্থল বিহারের সারন জেলার বানিয়াপুর গ্রাম৷ শুক্রবার ভোর রাতে সেখানে ট্রাক ভর্তি গরু নিয়ে যেতে দেখে গাড়িটি আটক করে গোরক্ষকদের দল৷ তারপরই গরু চোর সন্দেহে ওই ট্রাক থামিয়ে ৩ ব্যক্তিকে বেধড়ক পেটানো হয় বলে অভিযোগ। এতটাই নির্মমভাবে মারা হয়, হাসপাতালে পৌঁছনর আগেই মৃত্যু হয় ওই ৩ জনের। ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে ওই ৩ মৃতদেহ।
পুলিশ জানিয়েছে, তিন যুবক একটি ছোট গাড়ি করে গরু নিয়ে যাচ্ছিলেন৷ ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ গাড়িতে গরু-সহ তিনজনকে দেখে রাস্তার মাঝে গাড়ি থামান স্থানীয়রা৷ গাড়ির ভিতরে থাকা গরুর মালিকানা নিয়ে তাঁদের প্রশ্ন করা হয়। উত্তরে অসঙ্গতি মিলতেই গাড়ি থেকে টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে আনা হয় ওই তিনজনকে৷ তারপরই কমপক্ষে জনা পঞ্চাশেক মানুষ গরু চোর সন্দেহে বেধড়ক মারধর করে তাঁদের৷
খানিকক্ষণের মধ্যেই অচৈতন্য অবস্থায় রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন তাঁরা৷ এরপরই পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে ঘটনাস্থল ছেড়ে চম্পট দেয় আক্রমণকারীরা। শুক্রবার সকালে ওই তিন যুবকের পরিজনরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই তিনজনকে উদ্ধার করে ছাপরা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
এই ঘটনায় স্থানীয় থানায় বিক্ষোভ দেখান নিহতদের পরিবার। তাদের তরফে খুনের অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে৷ এখনও পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ বাকিদের খোঁজে চলছে তল্লাশি৷ উল্লেখ্য, এর আগেও গরু চোর সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে বিহারে। তাছাড়া চলতি মাসে বিজেপি শাসিত ত্রিপুরাতেও গরু চোর সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। ৩৬ বছর বয়সী বুধি কুমার ত্রিপুরা নামে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়।