“We have moved beyond the age of Hot Wars & Cold Wars, to an age of Sombre Wars conducted in the shadows”।
আমরা আর পরমাণু যুদ্ধ বা ঠান্ডা যুদ্ধ করি না। আমরা এমন এক সময়ে দাঁড়িয়ে যখন ঘোলাটে কোন অসম ছায়া যুদ্ধ হয় একে অপরের সাথে।
ভয় পাবেন না। কোন কেমিক্যাল ওয়েপন নেই। কোন পরমাণু যুদ্ধ হচ্ছে না কাল। স্রেফ আপনি আবার এই খেলার এক বোরে হলেন। আপনি না চাইলে ও হতেন। তাই উদযাপন করুন। মন যাতে আনন্দিত হয় তাই করুন। মাথায় রাখুন এই দাবা খেলায় আপনি স্রেফ একজন বোরে। মন্ত্রী নৌকা ঘোড়া লাভের অংশ তুলে নিয়েছে ঘরে।
ফেসঅ্যাপ নিয়ে ও আবার ত্রাহিত্রাহি রব। আপনি যে যে তথ্য নেওয়ার অনুমতি ফেসবুক, টুইটার, টিকটককে দিয়েছেন সেটাই এবার এই এ সমস্ত তথ্য নিয়ে নিলো আপনার৷ এবার আপনার তথ্য চলে গেল রাশিয়ায়। এবার আপনাকে পথে বসাবে এই অ্যাপ। ঠিক, আপনার এবং আপনার মতো ৫০ কোটি মানুষের ডেটাবেস, আইরিশ, বায়োমেট্রিক তথ্য এখন এই কোম্পানির হাতে। চাইলেই এরা যা ইচ্ছে তাই করতে পারে। কিন্তু কেন করবে?
মাথায় রাখুন। এই সাইবার যুদ্ধে আপনি একটা ক্রিমির থেকে ও ছোট ভূমিকা পালন করছেন। যদি গুগল, ফেসবুক, টিকটক বা ফেসঅ্যাপ সত্যিই চায় গোটা পৃথিবীতে অস্থিরতা তৈরি করবে, আপনি কিচ্ছুটি করতে পারবেন না। ফ্যালফ্যাল করে যেমন হাইড্রোজেন বোমা আকাশ থেকে নামতে দেখা ছাড়া আপনার কিছু করার থাকে না।
হ্যাঁ এটা ঠিক। আগামী দিনে বিশ্বযুদ্ধ হবে কার কাছে কতো হাজার কোটি মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য আছে তা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে। আমেরিকার ফেসবুক, গুগলের পাল্টা চায়নার টিকটক আর রাশিয়ার ফেসঅ্যাপ। হবে হবে। লড়াই হবেই।
কিন্তু আপনি কি করবেন? আপনার অবস্থান কি হবে? হলে ও তাতে কি এলো গেলো রাষ্ট্রপ্রধানদের। মাথায় রাখবেন আপনি এই যুদ্ধের কিচ্ছুটি পাল্টাতে পারবেন না। আমার, আপনার, নরেন মোদির, শচীন তেন্ডুলকারের, সানী লিওনের অনেক অনেক উপরে এই ছায়া যুদ্ধ হবে।
আমেরিকার জ্বালা সবেচেয়ে বেশি। তাই তাদের মিডিয়া, সরকার ও সবচেয়ে বেশি গেল গেল রব তুলেছে। এতোদিন অবধি ফেস ম্যাপিং এর একচেটিয়া ব্যবসা করর এসেছে আমেরিকা। এই যে চশমার কোম্পানি আপনাকে কোন ফ্রেম পরলে কেমন লাগবে দেখায়, বা চুলের সেলুন কোন উইগ লাগালে কেমন দেখতে লাগবে বলে সেই সফটওয়্যার গুলো আমেরিকান ছিল। কোম্পানিরা কিনতো ও। এখন এই পুরো ব্যবসাটা রাশিয়া ঘেঁটে ঘুঁটে একশা করে দিলো। তার উপরে পুটিন এক হপ্তাতে আধা পৃথিবীর ইমেজ পেলো আরো উন্নততর সফটওয়্যার বানাবে বলে।
এর মাঝে প্রতিবারের মতো এবার ও বিভিন্ন সংস্থা আপনাকে ভয় পাইয়ে, আপনার ছবি ব্যবহার করে নিলো। আপনি শেয়ার করলেন, তাদের ওয়েবে হিট বাড়ালেন। সবাই বললো ভয়ানক বিষয় কিন্তু কেউ উপায় বাতলে দিলো না।
উপায় নেই আসলে৷ আপনি চাইলেই ফিরে যেতে পারেন প্রাগৈতিহাসিক কালে কোন নোকিয়ার মোবাইল হাতে, কোন ইন্টারনেট সাথে না নিয়ে। কিন্তু আপনার আধারের তথ্য ও অনেকের কাছে আছে। আপনি না চাইলে ও আপনার তথ্য অনেকের মারফৎ চলে যাচ্ছে বিদেশ বিভুইয়ে। পারবেন এর সমস্তটা আটকাতে?
সর্বশক্তিমানের সাথে লড়া সম্ভব? আমরা আর পরমাণু যুদ্ধ বা ঠান্ডা যুদ্ধ করি না। আমরা এমন এক সময়ে দাঁড়িয়ে যখন ঘোলাটে কোন অসম ছায়া যুদ্ধ হয় একে অপরের সাথে। আপনি খামোকা আদার ব্যাপারী হয়ে জাহাজ এর খোঁজ নিচ্ছেন। বিগ ব্রাদার জানে আপনার ধক, আপনার দৌড়, কিচ্ছু বলে না চুনো পুঁটি বলে। তার চেয়ে ফূর্তি করুন আপনার পরিসরে।আগে ট্রাম্প, জিনপিং আপনার চোখের রঙ, ব্যাংক এর নম্বর, নিষিদ্ধ নেশা এমনকি জাঙ্গিয়ার সাইজ জানতো৷ এখন আপনার ব্যাক্তিগত তথ্য সেই সুদূর রাশিয়ায় পুতিনের সাথে বসে ভোদকা খাচ্ছে৷
মতামত লেখকের ব্যক্তিগত