জবি জাস্টিনকে আসন্ন মরশুমে এটিকে’তে খেলার অনুমতি দিল অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন। তবে দিল্লির ফুটবল হাউসে সভার পর ফেডারেশনের প্লেয়ার্স স্ট্যাটাস কমিটি জবি জাস্টিনকে সরাসরি ফ্রি প্লেয়ার হিসাবে ঘোষণা করেনি। জবি জাস্টিনের শেষ ক্লাব ছিল ইস্ট বেঙ্গল। তিনি লাল হলুদে খেলতে চেয়ে চিঠিও দিয়েছিলেন। যদিও কোনও চুক্তিপত্র দেখাতে পারেনি ইস্ট বেঙ্গল। তাই জবিকে এটিকে’তে খেলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে ইস্ট বেঙ্গলকে বলা হয়েছে জবি জাস্টিনকে সাত দিনের মধ্যে রিলিজ অর্ডার দিয়ে দিতে। ইস্ট বেঙ্গল যদি সাত দিনের মধ্যে এনওসি না দেয় তবে ফেডারেশন সরাসরি জবিকে ফ্রি প্লেয়ার ঘোষণা করে এটিকে’তে খেলার নির্দেশ দেবে।
গত মরসুমে লাল-হলুদ জার্সি গায়ে আই লিগে খেলার সময়ই এটিকে-র তিন বছরের চুক্তিতে সই করেন কেরল স্ট্রাইকার। লাল-হলুদ শিবিরের তরফে পাল্টা দাবি করা হয়, ইস্টবেঙ্গলে থাকতে চেয়ে চিঠি দিয়েছেন জবি। ভারতীয় দলের স্ট্রাইকার অবশ্য প্রথম থেকেই সেই দাবি উড়িয়ে দেন। তিনি জানান, নিয়ম মেনেই এটিকের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে এআইএফএফ ও আইএফএ-র দ্বারস্থ হয় ইস্টবেঙ্গল। জবির চিঠি পাঠানো হয় হস্তলিপি বিশারদের কাছে। চিঠিতে জবিই সই করেছেন বলে রিপোর্ট দেন সেই বিশেষজ্ঞ। এর পরেই আইএফএ-র প্লেয়ার্স স্টেটাস কমিটি জানিয়ে দেয়, ইস্টবেঙ্গলেই খেলতে হবে জবিকে। এই পরিস্থিতিতে কেরল স্ট্রাইকার এআইএফএফ-র দ্বারস্থ হন। লিখিত আবেদন করেন সমস্যা সমাধানের জন্য। জুন মাসে তিনি ফেডারেশনকে লেখেন, ‘‘এটিকের তিন বছরের চুক্তিতে সই করেছি। ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে আমার চুক্তি শেষ হয়ে গিয়েছে ৩১ মে। এর পরে আর কোনও চুক্তিতে আমি সই করিনি। আমার পুরনো ক্লাব ইস্টবেঙ্গলকে অনুরোধ করেছি, এটিকে-তে খেলার জন্য প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র দিতে। অথচ এখনও পর্যন্ত তা আমি পাইনি।’’ এখানেই শেষ নয়। আইএফএ-র সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দিয়ে জবি লেখেন, ‘‘এপ্রিল মাসে আমার এজেন্টকে নিয়ে আইএফএ সচিবের সঙ্গে আলোচনা করতে গিয়েছিলাম। পরে সংবাদমাধ্যমে দেখলাম, সচিব জানিয়েছেন, আমাকে ইস্টবেঙ্গলেই খেলতে হবে। শপথ করে বলছি, আমি এটিকের সঙ্গেই চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। সেখানেই খেলতে চাই।’’ এর পরেই ফেডারেশনের তরফে জানানো হয়, জবির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবেন প্লেয়ার্স স্টেটাস কমিটির সদস্যেরা। প্রত্যাশা মতোই তাঁরা খারিজ করে দিলেন আইএফএ-র রায়।
প্রশ্ন হল, জবি যদি কোনও ভাবেই ইস্ট বেঙ্গলের খেলোয়াড় না হন, তবে তাঁকে ইস্ট বেঙ্গল থেকে কেন রিলিজ অর্ডার আনতে হবে? এই প্রশ্নে ফেডারেশনের এক শীর্ষ আধিকারিক জানালেন,‘ইস্ট বেঙ্গল একটি চিঠি দেখিয়েছে। আইএফএ নিযুক্ত হস্তলিপিবিদ বলেছে ওটি জবির সই। তাই এখানে ইস্ট বেঙ্গলের কোনও বক্তব্য থাকতে পারে। জবি লাল হলুদের কাছ থেকে অতীতে টাকা ধার নিতে পারেন। একদম ফিফার নিয়ম মেনে ইস্ট বেঙ্গলকে এনওসি দিতে বলা হয়েছে। কোনওভাবেই জবি ইস্ট বেঙ্গলে খেলতে পারবে না। কারণ ওরা চুক্তি বা অগ্রিমের ভাউচার দিতে পারেননি। এখন ইস্ট বেঙ্গল যদি কলকাতা লিগে জবিকে খেলাতে চায়, তবে এটিকে থেকে লিয়েনে নিতে হবে।
ফেডারেশনের এক শীর্ষ কর্তা বললেন, ‘‘নিয়ম অনুযায়ী চুক্তি শেষ হওয়ার ছ’মাস আগে ফুটবলারেরা অন্য ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি করতে পারেন। এ-ক্ষেত্রে নিয়ম মেনেই এটিকের চুক্তিতে সই করেছেন জবি। ফলে ওঁর আইএসএলে খেলতে কোনও সমস্যা নেই।’’ জবির সই বিতর্ক মিটলেও গত বারের আই লিগ চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই সিটি এফসি-র মিডফিল্ডার নেস্তর গর্দিলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে ধোঁয়াশা অব্যাহত। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, নিয়ম না মেনে পুণে সিটি এফসি-র প্রাক-চুক্তিতে সই করেছেন। নেস্তরের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে ফের আলোচনায় বসবেন প্লেয়ার্স স্টেটাস কমিটির সদস্যেরা।