আসামের বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। এখনও ফুঁসছে ব্রহ্মপুত্র-সহ অন্যান্য নদীগুলি। যার ফলে বিপর্যস্ত রাজ্যের জনজীবন। ইতিমধ্যেই মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০-এ। তবে আসামের বন্যায় সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা হয়েছে কাজিরাঙা অভয়ারণ্যে। এখনও পর্যন্ত ৫০টিরও বেশি পশু বন্যায় প্রাণ হারিয়েছে বলে খবর এসেছে। এরই মধ্যে আশ্রয়ের খোঁজে বন্যাকবলিত জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এক ব্যক্তির শোয়ার ঘরে ঢুকে পড়ে একটি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার।
আস্তানা এখন জলের তলায়। ফলে গত কয়েক দিন ধরে ঘুম ছুটেছে। আশপাশে যেখানে উঁচু জমি ছিল, সব মোষ, গন্ডার, হাতিরা কব্জা করে নিয়েছে। ফুটখানেক জায়গা খালি পেলেও কাড়াকাড়ি চলছে হরিণদের মধ্যে। এ-হেন দুর্বিপাকে কাজিরাঙার বাগরি রেঞ্জের চেনা ডেরা ছেড়ে দু’পেয়েদের রাস্তায় উঠে এসেছিল বাঘিনীটি। গন্তব্য ছিল উল্টো দিকের কার্বি আংলংয়ের পাহাড়। কিন্তু খানিক এগোতেই চিৎকার, ছোটাছুটি, হল্লা শুরু হয়ে যায়। তার ফলেই ৩৭ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারের টিনের বেড়া এক লাফে টপকে বাঘিনীটি ঢুকে পড়ে লোহালক্কড়ের গুদামে। তারপর সোজা চৌকিদারের ফুলকাটা চাদরে ঢাকা খাটের উপরে।
বাইরের ঘরে তখন দোকান সামলাচ্ছিলেন রফিকুল ইসলাম। আশপাশের মানুষের চিৎকার শুনে শোয়ার ঘরে উঁকি মেরে দেখেন বিছানায় শুয়ে থাকা বাঘিনীটিকে। সকাল সাড়ে ৮টায় বাঘিনীর জঙ্গল থেকে বেরোনো, ৯টায় রফিকুলের ঘরে শুতে যাওয়া থেকে শুরু করে গোটা সন্ধ্যাই উৎকণ্ঠা কাটে রফিকুল-সহ কাজিরাঙার বাগরি রেঞ্জের হারমুতি এলাকার পুলিশ, বনকর্মী, পশু চিকিৎসকের দলের। পরে বাঘিনীটি জঙ্গলমুখী হলেও জঙ্গলে ঢোকার আগেই রাস্তার ধারের আর একটি বাড়িতে ঢুকে পড়ে। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, বাঘিনীটিকে বের করার চেষ্টা চলছে।