আর একদিন। তারপরই সব পথ এসে মিলবে ধর্মতলায়। সেখানে জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে দলীয় কর্মীদের নতুন লড়াইয়ের বার্তা দেবেন জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।ফি বছরের মতো মিলিত হবেন ২১ জুলাইয়ের শহিদ তর্পণে। তৃণমূলের বার্ষিক এই সমাবেশ দলের কর্মীদের কাছে নিছক কোনও কর্মসূচি নয়। মা-মাটি-মানুষের ভাবাবেগ জড়িয়ে থাকে এই সমাবেশের পরতে পরতে। তাই বৃহস্পতিবার রাতেই উত্তরবঙ্গ থেকে কর্মীরা আসতে শুরু করেছেন কলকাতায়। শুক্রবার সকালে যারা এসেছেন, তাঁরা শিয়ালদা ক্যাম্প অফিস হয়ে গেছেন সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কে। এখানেই উত্তরবঙ্গ থেকে আসা কর্মীদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আজ থেকেই কলকাতায় ভিড় শুরু হয়ে যাবে।
দলীয় কর্মী-সমর্থকদের আতিথেয়তায় কোনও ত্রুটি না রাখাকেই চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়েছে রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্ব। মিলন মেলা, ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্র ও কসবার গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামসহ মধ্য কলকাতার বিভিন্ন ধর্মশালা ও কমিউনিটি হল মিলিয়ে লক্ষাধিক মানুষের থাকা-খাওয়া ও রাত্রিবাসের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। রাখা হয়েছে আপৎকালীন চিকিৎসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। প্রতি বছরই শহীদ দিবসের দু’দিন আগে থেকেই মানুষ আসতে শুরু করে ধর্মতলার সমাবেশের উদ্দেশ্যে। মূলত উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি থেকেই সবার আগে শুরু হয় এই জনস্রোত। সকাল থেকে দুই দিনাজপুর এবং কোচবিহার থেকে লোক আসতে শুরু করেছে।
২১ জুলাইয়ের শহীদ সভার এবার গুরুত্ব একটু অন্যরকম। সবে লোকসভা নির্বাচন শেষ হয়েছে। ফলাফলের পর দলের পক্ষ থেকে বিজেপি-র বিরুদ্ধে ইভিএম নিয়ে কারচুপির অভিযোগ করা হয়েছে। তাই দলনেত্রী দাবি করেছেন, ‘গণতন্ত্র ফিরিয়ে দাও, ইভিএম নয়, ব্যালট ফেরাও।’ তৃণমূলের এক নেতা বলেন, ‘২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে দলনেত্রী নতুন বার্তা দেবেন। আগামী দিনে কর্মীদের কী করতে হবে, সে নির্দেশও তিনি দেবেন। তাঁর বক্তব্য শোনার অপেক্ষায় রয়েছেন সবাই। এবার দেখা যাচ্ছে, মহিলাদের মধ্যে উৎসাহ আরও বেশি।
পদযাত্রায় তাঁরা অংশ নিচ্ছেন। পথসভায় মহিলা নেত্রীরা বক্তব্য রাখছেন। ধর্মতলায় লাগানো হচ্ছে জায়ান্ট স্ক্রিন। এছাড়া ‘মে আই হেল্প ইউ’ নাম দিয়ে শহর জুড়ে প্রচুর ক্যাম্প করা হবে। ক্যাম্পে যুব নেতারা থাকবেন। পুরনো কর্মীদের দেখা যাচ্ছে। তাঁদের নিয়ে এসেছেন মমতা। কাজে লাগানো হচ্ছে। মমতার ডাক পেয়ে তাঁদের উৎসাহ বেড়ে গেছে। অভিমান ভুলে এখন একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই শুরু করেছেন তাঁরাও।