সদ্য লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছিল। খুব তাড়াতাড়ি ঋণ মুক্ত হয়ে ‘মিনিরত্ন’ স্বীকৃতি পাবার দিকে এগোচ্ছিল। ঠিক তখনই ধাক্কা দিল মোদী সরকার। আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় প্রতিষ্ঠিত শতাব্দী প্রাচীন বেঙ্গল কেমিক্যালসের বিলগ্নিকরণের পথে আরও এক ধাপ এগোল কেন্দ্র।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বেঙ্গল কেমিক্যালস অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালস-সহ দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত ওষুধ সংস্থার কৌশলগত বিলগ্নিকরণের বিষয়ে চার বছর আগেই নেওয়া সিদ্ধান্ত এ বার কার্যকর হবে। তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, ‘বেঙ্গল কেমিক্যালস ও হিন্দুস্তান অ্যান্টিবায়োটিকসের স্ট্র্যাটেজিক সেল হবে। ইন্ডিয়ান ড্রাগস ও রাজস্থান ড্রাগস বন্ধ করে দেওয়া হবে। সংস্থাগুলির অতিরিক্ত জমি বেচে টাকা তোলা হবে’। এ জন্য মন্ত্রীদের নিয়ে একটি কমিটি হবে। অন্য দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বন্ধ করে দেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। সে বিষয়েও যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবে এই কমিটি। এই সংস্থাগুলির অতিরিক্ত জমি বিক্রি করে টাকা তোলা হবে।
১৯০১ সালে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন দেশের প্রথম এই ওষুধ সংস্থাটি। দীর্ঘ লোকসানের জেরে ১৯৭৭ সালে এটির জাতীয়করণের সিদ্ধান্ত কেন্দ্র। তবে ১৯৯২-এ বিআইএফআরে চলে যায় সংস্থাটি। ২০০৭-এর পরে আর কেন্দ্রের সাহায্য মেলেনি – এমনই দাবি সংস্থার কর্মীদের। তাঁদের কথায়, ‘এরপর সংস্থা নিজেই ঘুরে দাঁড়িয়ে পর পর তিন বছর লাভের মুখে দেখেছে। কোনও জমিও বিক্রি করতে হয়নি। তা হলে বিলগ্নিকরণ বা জমি বিক্রির দরকার কী? আসলে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকে বেসরকারি হাতে তুলে দিতে চাইছে কেন্দ্র। সব ওষুধ সংস্থাকেই পরিকল্পিত ভাবে রুগ্ণ করার চেষ্টা করছে’।
বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্তে সংস্থার কর্মীরা ব্যাপক ক্ষুব্ধ। এ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলাও ঝুলে রয়েছে। হাইকোর্টের এক বিচারপতির বেঞ্চ বিলগ্নিকরণের বিরুদ্ধেই রায় দিয়েছিল। তার বিরুদ্ধে কেন্দ্র ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করে। সেই শুনানি এখনও হয়নি। আগামী সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে বলে এ দিন জানিয়েছেন কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল কৌশিক চন্দ।