লাগাতার বৃষ্টির জেরে দিনদিন যত খারাপ হচ্ছে রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি, ততই হিমশিম খাচ্ছে আসামের বিজেপি সরকার। রাজ্যের যে দিকেই চোখ যায়, বিপর্যস্ত জনজীবন। ডুবে গেছে অধিকাংশ পথঘাট, লোকালয়। এমনকী বিখ্যাত কাজিরাঙা জঙ্গলও। এই মুহূর্তে কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের প্রায় ৯৫ শতাংশই জলের তলায়। যার ফলে এখনও পর্যন্ত সেখানে ৩০টি বন্যপ্রাণীর মৃত্যুর খবর মিলেছে। তবে শুধু কি বন্যপ্রাণী? ইতিমধ্যেই রাজ্যের ৩০ জেলার ৪ হাজার ৬০০টি গ্রাম জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। যার ফলে ক্রমাগত বেড়ে চলেছে বন্যাতে মানুষ মরার সংখ্যাও। মঙ্গলবার জলে ডুবে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হওয়ায়, মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০। গোটা রাজ্য জুড়ে ইতিমধ্যেই লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, আসামের ৩৩ জেলার মধ্যে ৩০টি জেলার প্রায় ৫২ লক্ষ মানুষ জলমগ্ন হয়ে রয়েছে। তার মধ্যে সবথেকে খারাপ অবস্থা বারপেটা, গোয়ালপাড়া, মরিগাঁও, ন’গাঁও, হাইলাকান্দি প্রভৃতি জেলার। ব্রহ্মপুত্রের জল প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। রাজ্যের রাজধানী গুয়াহাটির অবস্থাও খারাপ। এ ছাড়া রাজ্যে যে আরও ১০ নদী রয়েছে, সবার জল বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। যদিও বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার কাজ করছে রাজ্য সরকারের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। তবে তাদের ব্যর্থতার ফলে পরিস্থিতি ক্রমশই হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। বেশ কিছু জায়গায় যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণই বিপর্যস্ত হয়ে গিয়েছে।
অন্যদিকে, বন দফতরের তরফে জানানো হয়েছে কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের প্রায় ৯৫ শতাংশ এলাকা জলমগ্ন। একশৃঙ্গ গণ্ডারের জন্য বিখ্যাত এই উদ্যানে গত তিন’দিনে ৩০টি বন্য জন্তুর মৃত্যু হয়েছে। জলের হাত থেকে বাঁচার জন্য পশুরা জঙ্গল ছেড়ে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে। ফলে জন্তুদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হিমশিম খাচ্ছে বন দফতর। এই বন্যায় চাষ-আবাদ ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় ৯০ হাজার হেক্টর জমি প্লাবিত হয়ে গিয়েছে। ক্ষেত ডুবে চাষীদের মাথায় হাত। বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও রাজ্যের অর্থনীতিতে তার প্রভাব ভালভাবেই পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।