অভিনেত্রী মাধবী মুখোপাধ্যায় বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন এমন খবর ছড়িয়ে পড়তেই বেশ হতবাক হয়েছিল সবাই। কাল থেকেই এই খবর ঘুরছে রাজনৈতিক মহলের আবহাওয়ায়। তবে এইবার সেই খবরকে ‘ভুয়ো’ বলে নিজেই উড়িয়ে দিলেন এই বর্ষীয়ান অভিনেত্রী। তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে বলে মনে করছেন তিনি। তাঁর কথায়, তিনি বিজেপির কোনও সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নন। প্রতারণা করে তাঁকে দিয়ে একটি কাগজে সই করানো হয়েছে এবং তাঁর বিজেপিতে যোগদানের কথা প্রচার করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, টলিপাড়ায় একাধিক সংগঠনের পাশাপাশি নিজেদের নতুন সংগঠনেরও শক্তি বাড়ানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। বঙ্গীয় চলচ্চিত্র পরিষদ নামে থেকে একটি সংগঠন তৈরি হয়েছে। গত শনিবারই বিজেপি ঘনিষ্ঠ পরামর্শদাতা হিসাবে একসময়ের বামঘনিষ্ঠ অভিনেতা বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়ের যোগদানের খবরে অনেকেই অবাক হয়েছিলেন। তারপরই মাধবী মুখোপাধ্যায়ের বিসিপি-কে সমর্থনের খবর শোনা যায়। মঙ্গলবার তথ্যের সত্যতা না যাচাই করেই বেশকিছু সংবাদমাধ্যমে বঙ্গীয় চলচ্চিত্র পরিষদে অভিনেত্রী মাধবী মুখোপাধ্যায়ের যোগদানের খবর প্রকাশিত হয়।
এই খবরে বেশ ক্ষুদ্ধ হন অভিনেত্রী। তিনি বলেন, ‘বঙ্গীয় চলচ্চিত্র পরিষদের নাম নিয়ে মিলন ভৌমিক সহ বেশ কয়েকজন তাঁর কাছে আসেন। জানান, দুঃস্থ শিল্পী ও টেকনিশিয়ানসদের সাহায্যের জন্য তাঁরা বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছেন। এই সমস্ত শিল্পীদের প্রতি মাসে সাড়ে ৩ হাজার টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে আমাকে জানানো হয়। এক্ষেত্রে তাঁদের পাশে আছি কিনা জিজ্ঞাসাও করা হয়। এই উদ্যোগকেই স্বাগত জানিয়ে আমি তাঁদের পাশে থাকার বিষয়ে সহমত প্রকাশ করি।’
শুধু এখানেই নয়। তিনি জানান তাঁর সঙ্গে কিভাবে প্রতারণা করা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘এরপরই আমাকে একটি কাগজে সই করতে বলা হয়। আমি সেসময় চশমাও পরে ছিলাম না, কিন্তু তাঁদের বিশ্বাস করেই সেই কাগজে সই করি। আর এটাই কাল হয়েছে। আমাকে রাতে ফোন করে বেশকিছু জন প্রশ্ন করেন, আপনি বিজেপিতে গেছেন? একথা শুনে আমি অবাকই হয়। উত্তরে বলি, এইরকম তো কিছুই হয়নি। তারপরই পুরো বিষয়টা আমায় জানানো হয়। কী করব বুঝতে পারছিলাম না। আমি তো ভাবতেই পারছি না, আমার সঙ্গে এভাবে প্রতারণা করা হল! তাহলে মানুষকে বিশ্বাস করব না? কেউ বাড়িতে এলে তাড়িয়ে দেব নাকি? বিজেপিই হোক, আর যেই হোক, কোনও রাজনৈতিক দলের কথাই আমায় বলা হয়নি।’
এর তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থন করেন এবং মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা কাজ করেছেন, তাতে আমাদের সকলের তাঁর সঙ্গে থাকা উচিত। আমরা সবাই তাঁর সঙ্গে থাকলে উনি আরও ভালো কাজ করতে পারবেন। যাঁরাই থাকুন না কেন, তাঁদের আদর্শ থাকা উচিত। ওই মুকুল রায়ের মতো আদর্শ নয়, যে আজ এখানে কাল সেখান। সুবিধার জন্য আদর্শ হয় না, আদর্শ আলাদা বিষয়।’