কেন্দ্র বঞ্চনা করেছে বাংলার সঙ্গে। শিক্ষা নীতিতে বাংলাকে ‘অবজ্ঞা’ ও ‘বঞ্চনা’ করা হয়েছে। রাজ্যের শিক্ষাবিদ, শিক্ষক সংগঠন, শিক্ষা আধিকারিক এবং বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সোমবার দীর্ঘক্ষণ আলোচনার পর শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ কথা জানান। তাঁর কথায়, “শিক্ষা নীতির যে খসড়া কেন্দ্র পাঠিয়েছে, তা সামনে রেখেই কথা বলেছি। এতে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও রাজা রামমোহনের নাম নেই। এ কেমন শিক্ষানীতি!” এখানেই শেষ নয়। পার্থর কথায়, “এই খসড়া শিক্ষা নীতি তৈরির আগে কেন্দ্র বাংলার কোনও শিক্ষাবিদ ও শিক্ষক সংগঠনের সঙ্গেও কথাই বলেনি। এটা বাংলাকে বঞ্চনার সামিল। বাংলার সঙ্গে চক্রান্ত করা হচ্ছে”। অনেক জায়গায় দেখা যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যকে না জানিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়কে পাঠ্যক্রম পরিবর্তন করার চিঠি দিচ্ছে। কেউ কেউ না জেনেই সেটাকে অন্তর্ভুক্ত করছেন। আবার কেউ কেউ জানতেও চেয়েছেন। তাঁদের বলা হয়েছে, রাজ্যকে না জানিয়ে পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যসূচিতে কোনও বদল করবেন না।
আজকের আলোচনার গতিপ্রকৃতি দেখে শিক্ষামন্ত্রীর মনে হয়েছে, এই শিক্ষা নীতি নিয়ে শিক্ষাবিদ ও শিক্ষক নেতারাও একমত নন। তবে এখনই এই ব্যাপারে আন্দোলনের পথে না হেঁটে চিঠি লিখে প্রতিবাদের কথা বলেন পার্থ। তিনি বলেন, “এখনও কলমের জোর ফুরিয়ে যায়নি। সভার তরফে আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনে রাস্তায় নেমেও আমরা আপত্তির কথা জানাব। সভায় উপস্থিত শিক্ষাবিদ ও শিক্ষকরা নানা বিষয়ে তাঁদের বক্তব্য রেখেছেন। সেগুলি আবার একত্রিত করা হবে। মুখ্যমন্ত্রীকে দেব। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে আবার এই শিক্ষাবিদ ও সংগঠনের নেতাদের ডাকব। আবার মতামত নেব”।
নৃসিংহপ্রসাদ বলেন, “হিন্দি ভাষা চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। সেটা কোনওভাবেই মানা যায় না। শিক্ষা বাজেটে বরাদ্দ কমিয়ে রাখা হয়েছে। ফলে অনেকটাই রাজ্যের ঘাড়ে চাপবে”। শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার, নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি ও প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠকের পর শিক্ষামন্ত্রী জানান, এ দিন স্কুল নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এরপর কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় নিয়েও তাঁরা বসবেন। ১৭ জুলাই বুধবার, উচ্চশিক্ষা সংসদের বৈঠকেও বিষয়টি তুলবেন বলে জানান তিনি।