এসএসকেএমের এইমসের ধাঁচে ট্রমা কেয়ার সেন্টারের আজ সকাল থেকে পুরোদস্তুর ট্রমা রোগীদের ভর্তি নেওয়া শুরু হচ্ছে। বিশ্বমানের আধুনিক ট্রমা কেয়ার সেন্টারটি ১ জুলাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্বোধন করেন। তার পর দু’সপ্তাহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা ২০–২৫ জন রোগীকে এখানে রেখে চিকিৎসা করা হয়। ট্রমা কেয়ার সেন্টারের কোর গ্রুপের সদস্য জেনারেল সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডাঃ মাখনলাল সাহা জানিয়েছেন, “অপারেশন থিয়েটারে ফিউমিগেশনের কাজ চলছিল। তাই এই ক’দিন সরাসরি ট্রমা রোগী ভর্তি নেওয়া হচ্ছিল না। তবে নতুন কর্মীদের ধাতস্থ করতে কয়েকজন কোল্ড কেস রোগীকে ভর্তি রেখে ট্রায়াল দেওয়া হয়েছে। পুরোদস্তুর রোগী ভর্তির জন্য এখন সবদিক থেকে প্রস্তুত”।
কীভাবে ট্রমা কেয়ার সেন্টারে কাজ করতে হয়, তা জানতে এসএসকেএম থেকে নার্সদের একটি টিম দিল্লীর এইমস থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তাঁরা ফিরে হাসপাতালের বাকি নার্সদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। চিকিৎসকদের একটি দলও গিয়েছিল দিল্লীতে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে।
ট্রমা রোগী ভর্তির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক স্কোর অনুযায়ী লাল, হলুদ ও সবুজ জোন ভাগ করা হয়েছে। খুব খারাপ রোগীকে লাল জোনে রেখে আইসিইউ–তে দেওয়া হবে। অল্প আঘাত মানে মাঝারি পর্যায়ের রোগীকে হলুদ জোনে রেখে চিকিৎসা চলবে। একটু স্থিতিশীল, আইসিইউ–তে রাখার প্রয়োজন নেই এমন রোগীকে সবুজ জোনে।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, সম্পূর্ণ রাজ্য সরকারের বরাদ্দে এটি লেভেল ওয়ান ট্রমা কেয়ার সেন্টার। মোট ১০০ কোটি টাকার প্রকল্প। দশতলার বিল্ডিংয়ে থাকছে ৬টি আলট্রা মডার্ন অপারেশন থিয়েটার, ২৪৪টি বেড, ৬২টি বেডের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট বেড। আপাতত এখন ১৪০টি বেড, ৪টি ওটি এবং ৩৭টি আইসিইউ দিয়ে শুরু হচ্ছে। আলট্রাসোনোগ্রাফি, ডিজিটাল এক্স–রে, সিটি স্ক্যান, এমআরআই প্রভৃতি পরিষেবা থাকছে। ৭৬৪ পদে নিয়োগ হবে। আপাতত ২০০ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। তার মধ্যে নার্স, টেকনিশিয়ান, প্যারামেডিক্যাল কর্মী মিলিয়ে ১২৫ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। এই সেন্টারের কোর গ্রুপের অন্য সদস্যরা হলেন ডাঃ সুদীপ্ত চ্যাটার্জি, ডাঃ তন্ময় দত্ত এবং ডাঃ রজত চৌধুরি। এই বিভাগের ইনচার্জ হলেন এসএসকেএমের অধিকর্তা ডাঃ মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায়।
ডাঃ মাখনলাল সাহা বলেন, “নির্দিষ্ট কোনও চিকিৎসকের নামে নয়, ইউনিটের নামে রোগী ভর্তি হবেন। প্রতি ইউনিটেই জেনারেল, অর্থোপেডিক, নিউরো, প্লাস্টিক, কার্ডিওথোরাসিক ভাসকুলার সার্জেন থাকবেন। অ্যানাস্থেটিস্ট এবং শিশুদের ক্ষেত্রে পেডিয়াট্রিক সার্জেন থাকবেন। রোগী প্রথমে পাঁচজন বিশেষজ্ঞের অধীনেই থাকবেন। রোগীর নির্দিষ্ট কোন অংশে আঘাত, তা বুঝে নির্দিষ্ট সেই বিশেষজ্ঞ দেখবেন”।