কর্ণাটকের গণতান্ত্রিক সরকার ফেলতে উঠেপড়ে লেগেছে বিজেপি। ‘ঘোড়া কেনাবেচা’র রাজনীতির পাশাপাশি চলছে আরও নানা ষড়যন্ত্র। যার ফলে সেখানে কংগ্রেস-জেডিএস জোট সরকারে সঙ্কটের জন্য বিজেপির দিকেই আঙুল তুলছেন বিরোধীরা। পাশাপাশি, গোয়াতেও দল ভাঙানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে পদ্মশিবির। বুধবার গোয়ার ১৫ জন কংগ্রেস বিধায়কের মধ্যে ১০ জনই যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। এর মধ্যেই বিজেপির হুঙ্কার, দু’মাসের মধ্যে কংগ্রেসের সরকার পড়ে যাবে মরু-রাজ্য রাজস্থানেও!
দিল্লীর কোনও বড় নেতা নন, বরং রাজস্থানের বিজেপি বিধায়কদের দিয়েই এমন মন্তব্য করিয়ে চাপ বাড়ানো হল অশোক গেহলট সরকারের ওপর। রাজস্থানের তিন বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহোটি, বাসুদেব দেবানানী এবং কালীচরণ সারফের বক্তব্য, “দু’মাসের মধ্যেই রাজ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হবে। যে কোনও সময় সরকার পড়ে যেতে পারে। রাহুল গাঁধীর ইস্তফার পরেই রাজস্থানে কংগ্রেসের বিধায়কদের মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। তার মধ্যে অশোক গেহলট ও শচীন পাইলটের মধ্যেও বিবাদ যে ভাবে চরমে পৌঁছেছে, তাতে এই সরকার বেশি দিন টিকবে না।”
রাজস্থানের কংগ্রেস নেতৃত্ব মানছেন, কর্ণাটক ও গোয়ায় কংগ্রেস শিবিরে যে অস্থিরতা বিজেপি তৈরি করেছে, সেই অস্থিরতাই তারা তৈরি করতে চায় কমল নাথের মধ্যপ্রদেশ ও গেহলটের রাজস্থানে। কমল নাথ ইতিমধ্যেই নিজের রাজ্যে বিধায়কদের পাশে রাখার কৌশল রচনা করেছেন। যে বিধায়করা দল ছেড়ে চলে যেতে পারেন, তাঁদের সঙ্গে নিজে যোগাযোগ রাখছেন। পাশাপাশি ৩-৪ জন বিধায়কের ওপরে নজরদারি করার জন্য এক-এক জন মন্ত্রীকে দায়িত্ব দিয়েছেন। সপা-বসপা এবং যে নির্দল বিধায়কদের সমর্থনে তাঁর সরকার চলছে, তাঁদেরও পাশে রাখতে মরিয়া কমল নাথ।
রাজস্থানে মাটি কামড়ে পড়ে রয়েছেন গেহলটও। সম্প্রতি রাজ্যে বাজেট পেশ করে তিনি জানিয়েছেন, সব গ্রামবাসী তাঁকেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চেয়েছেন। কংগ্রেস নেতা প্রশান্ত বৈরওয়াও বলেন, ‘বিজেপি আসলে ঘোড়া কেনাবেচার ছক কষছে। কিন্তু কংগ্রেস একজোট আছে।’ তবে মোদী সরকার দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর যেভাবে আগ্রাসী গেরুয়া শিবির তাদের ঘৃণ্য রাজনীতির মাধ্যমে বিভিন্ন রাজ্যে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত অ-বিজেপি সরকার ভাঙার চেষ্টা করছে, তার পরে মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থানে সরকার কত দিন টিকবে, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে হাত শিবিরের অন্দরেও।