নিউজিল্যান্ডের কাছে সেমিফাইনালে ভারতের হারের পরে কেটে গিয়েছে ৪ দিন। এখনো অনেকেই এই হারের শোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি। এর মধ্যেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উঠল ভারতীয় শিবিরে। টিম ইন্ডিয়ার সাজঘরের ভিতরের খবর বেরিয়ে পড়ছে সবার সামনে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, দলের অন্যান্য ক্রিকেটারদের মতামতকে গুরুত্বই দিচ্ছেন না অধিনায়ক কোহালি ও হেড কোচ রবি শাস্ত্রী। বিশ্বকাপ চলাকালীন অধিনায়ক ও কোচ মিলে নাকি একতরফা সব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর ফলে দলের মধ্যেই অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল। জানা গেছে, শাস্ত্রীদের এমন বাড়বাড়ন্তের পিছনে রয়েছে বোর্ডের ক্রিকেট প্রশাসনিক কমিটির প্রধান বিনোদ রাইয়ের সমর্থন।
বিশ্বকাপের চূড়ান্ত দল নির্বাচনের ক্ষেত্রেও কোহালি ও শাস্ত্রীর বক্তব্যকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল। অম্বাতি রায়ডুকে ইংল্যান্ডের বিমানে ওঠার টিকিট দেননি নির্বাচকরা। তাঁর পরিবর্তে বিজয় শঙ্করকে সুযোগ দেওয়া হয়। কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছিল, শঙ্কর ক্রিকেটের তিনটি বিভাগেই (ফিল্ডিং, বোলিং ও ব্যাটিং) ভাল। অথচ বিশ্বকাপে শঙ্কর নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। মাত্র তিনটি ম্যাচ খেলার পরে চোটের জন্য ছিটকে যেতে হয় তাঁকে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, শঙ্করকে দলে নেওয়ার ক্ষেত্রে কোহালি ও শাস্ত্রী একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
রোহিত এবং যশপ্রীত বুমরাহ ভারতীয় দলে অপরিহার্য। বাকিদের এই দলে জায়গা দোদুল্যমান। কোহালি-ঘনিষ্ঠ হলে তবেই মিলবে দলে সুযোগ। রোহিত-পন্থীদের দলে জায়গা পাওয়া আবার কঠিন। রিপোর্ট অনুযায়ী, লোকেশ রাহুলের মাথায় ছিল শাস্ত্রী-কোহালির আশীর্বাদের হাত। সেই কারণে গোটা টুর্নামেন্টে ধারাবাহিকতা দেখাতে না পারলেও দলে থেকে গিয়েছেন তিনি। একই কারণে এক জন স্পিনারকে খেলানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে যুজবেন্দ্র চহালই ছিলেন কোহলির এক নম্বর পছন্দ। সেখানে কুলদীপ যাদবের জায়গা হবে ডাগ আউটে। কারণ ভারত অধিনায়কের সঙ্গে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরে খেলেন চহাল। প্রতিবেদন অনুযায়ী,দলের অনেকেরই আস্থা হারিয়েছেন শাস্ত্রী ও বোলিং কোচ ভরত অরুণ। সেই অনুযায়ী এক ক্রিকেটার জানিয়েছেন, ‘‘বিরাট তো ভালই খেলেছে। কিন্তু শাস্ত্রী আর অরুণ কবে পদত্যাগ করবে?’’
বোর্ডের রিপোর্ট অনুযায়ী, দলের মধ্যে বিভাজন তৈরি হলেও, তা অবশ্য বড় সড় আকার ধারণ করেনি। ক্রিকেটারদের মধ্যে মুখ দেখাদেখি বন্ধ এমন পরিস্থিতিও তৈরি হয়নি। তবে বিশ্বকাপ চলাকালীন দলের মধ্যেই যে দুটো দল তৈরি হয়ে গিয়েছিল তা পরিষ্কার। দেশে ফিরলে কোহালির দিকে এই নিয়ে যে প্রশ্নবাণ উড়ে আসবে, তা বলাই বাহুল্য।