প্রতিদ্বন্দ্বীতা। শব্দটি শুনতে নেতিবাচক হলেও সবথেকে বেশি ইতিবাচক হয়ে ওঠে এটি। জীবনের প্রতি সময় নিজেকে হয় নিজের সঙ্গে নয়তো কারোর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতেই হয়। জীবনে সবক্ষেত্রে যখন প্রতিযোগিতা আছে সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বীতা চলে সমানে। তবে এই প্রতিদ্বন্দ্বীতার মধ্যে দিয়েই উঠে আসে এক সুন্দর কাজ। যা সারা বিশ্বকে ভাবায়।
কয়েক শতক পিছিয়ে গেলে আমরা এমন দুই শিল্পীকে পাবো যাঁদের প্রতিদ্বন্দ্বীতার কথা বিশ্বখ্যাত। আজ তাঁদের মৃত্যুর এত বছর পরেও তাঁদের সৃষ্টি নিয়ে চলে প্রতিদ্বন্দ্বীতা। লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি এবং মিচেল এঞ্জেলো। একই সময়ে উঠে আসা দুই অসামান্য শিল্পী। ১৫০৪ সালে প্রথম তাঁরা এক মঞ্চে কাজ করেছিলেন। যখন হলের এক প্রান্তে ভিঞ্চির ক্যানভাসে উঠছে যুদ্ধের চিত্র, ঠিক সেই সময়ই হলের অপর প্রান্তে এঞ্জেলোর ক্যানভাসও তুলির টানে রাঙা হয়েছিল।
কয়েক শতক পরে আজকের দিনেও এমন একটি প্রতিদ্বন্দ্বীতার গল্প আমরা জানি। এখানে তুলি নেই আছে টেনিস ব্যাট, আর ক্যানভাসের বদলে আছে ঘাস কাঁদার মাঠ। আর সেখানেই রজার ফেডেরার ও রাফাল নাদালের পায়ের ছন্দ, কিংবা রুদ্ধস্বাস খেলায় মেতে ওঠে বিশ্ববাসী। লন টেনিসের নক্ষত্র ফেডেরার জীবনে ২০টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছেন। অন্যদিকে, টেনিসের রাজা নাদাল ১৮টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছেন তাঁর খেলার জীবনে। তবে এখনও পর্যন্ত এই দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী মুখোমুখি হয়েছেন ৪০ বার। আর প্রতিবারই নতুন ইতিহাসের জন্ম নিয়েছে।
কোথাও যদি নাদাল এগিয়ে যান তো তার পরের মুহূর্তেই এগিয়ে থাকেন ফেডেরার। ২০০৪ সালে মিয়ামি মাস্টার্সে প্ৰথম এই দুই প্রতিদ্বন্দ্বী মুখোমুখি হন। সেই ম্যাচে অপ্রত্যাশিতভাবে বিশ্বের এক নম্বর টেনিস প্লেয়ার ফেডেরারকে হারিয়ে দিয়েছিলেন ১৭ বছর বয়সী নাদাল। তবে তাঁদের শেষ সাক্ষাৎ ২০১৯ এর উইম্বলডনের সেমিফাইনালে টেনিসের ঈশ্বর ফেডেরার জিতে নেন এবং আরও এক গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার দিকে পা বাড়ালেন।
এই ১৫ বছরে সবসময় একে অপরকে টেক্কা দিয়ে গেছেন। নিজেদের ছন্দে বিশ্ববাসীকে মাতিয়েছেন। কখনও এককভাবে, আবার কখনও জুটি বেঁধে চলেছে তাঁদের প্রতিদ্বন্দ্বীতা। তবে, নাদাল সবসময়ই তাঁর এই চির প্রতিদ্বন্দ্বীকে সমীহ করে চলেন। ফেডেরারের এই অসামান্য প্রতিভাকে সম্মান করেন। তাই আজকের ম্যাচের পর ফাইনালের জন্য আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে রাখলেন রাফাল নাদাল।