দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে দুরমুশ করে ২৭ বছর পর বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে ইংল্যান্ড। রবিবার ঐতিহাসিক লর্ডসে মরগ্যান বাহিনী খেতাবি লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে নিউজিল্যান্ডের। ইংল্যান্ড অতীতে কখনও বিশ্বকাপ জেতেনি। ইংল্যান্ড শেষবার ফাইনালে খেলেছিল ১৯৯২ সালে। ফলে খেতাব জয়ের স্বপ্নে বুঁদ ইংল্যান্ডের অধিনায়ক।
ফাইনালের আগে সতীর্থদের সতর্ক করে মর্গ্যান বলেন, ‘অনেক পরিশ্রম করে আমরা ফাইনালে উঠেছি। প্রথমবার বিশ্বকাপ জেতার সেরা সুযোগ এটাই। কোনওভাবেই তা হেলায় হারানো চলবে না। আত্মতুষ্টিতে ভোগার কোনও কারণ নেই। বিশ্বকাপ অভিযান এখনও শেষ হয়ে যায়নি। গোটা টুর্নামেন্টে আমরা যে দুরন্ত ক্রিকেট খেলেছি, সেটা ফাইনালেও মেলে ধরতে হবে। তাই ফাইনাল খেলতে নামছি ভেবে ভয় পেলে চলবে না। সামনের দিকে তাকাতে হবে। কারণ, আমরা ইতিহাসের সামনে দাঁড়িয়ে।’
রবিবারের ফাইনাল নিয়ে মর্গ্যানের মন্তব্য, ‘‘আমাদের কোনও চাপ নেই। ভয়ে গুটিয়ে থাকার প্রশ্নই ওঠে না। নিজেদের যোগ্যতায় লর্ডসে ফাইনাল খেলার টিকিট অর্জন করেছি। ফাইনালটাও উপভোগ করব। আশা করছি, সে ভাবেই সাফল্য আসবে।’’ লর্ডসে ফাইনাল। যে মাঠে গ্রুপ লিগে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারের পরে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ-ভবিষ্যতই কার্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। সেখান থেকে মর্গ্যানরা ঘুরে দাঁড়ান টানা তিনটি ম্যাচে জিতে। ইংল্যান্ডের অধিনায়ক তার জন্য বোলারদের অনেকটাই কৃতিত্ব দিচ্ছেন। এমনকি সেমিফাইনালেও জোফ্রা আর্চারদের জন্য সব কিছু এতটা সহজে হাতের মুঠোয় চলে এসেছে বলে তিনি মনে করছেন। ‘‘আমাদের বোলিং বিভাগের জন্য যতই প্রশংসা করি, সেটা যথেষ্ট হবে না। ওরা ধারাবাহিক ভাবে উইকেট তুলেছে। অবশ্যই এই ধরনের টুর্নামেন্টে ভাগ্যের সাহায্যও একটু হলে দরকার পড়ে। আমরা সেটাও পাচ্ছি। কিন্তু আসল কথা তো লাইন ঠিক রেখে সেরা বোলিংটা করে যাওয়া। সেটা আমাদের বোলাররা দারুণ ভাবেই করেছে। তা ছাড়া একটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনায় দল খেলেছে। যা কাজেও লেগেছে। যে কারণে স্টিভ (স্মিথ) আর ক্যারি (অ্যালেক্স) যে ভাবে ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিচ্ছিল, তখনও আমাদের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা কাজে এসেছে।’
আবেগে ভাসতে থাকা ইংরেজ অধিনায়ক বলেছেন, ‘‘মাঠের প্রত্যেক ক্রিকেটার এবং ড্রেসিংরুমে প্রতিটি সদস্য আমাদের সেমিফাইনাল ম্যাচটার প্রত্যেকটি বল উপভোগ করেছে। দলের কোনও এক জনের মধ্যেও নিজেকে প্রয়োগ করা বা দায়বদ্ধতার প্রশ্নে খামতি ছিল না। সব চেয়ে বড় কথা, গোটা দলটা মারাত্মক মাথা ঠান্ডা রেখে ম্যাচটা বার করেছে। যেন আমরা কোথাও ঘুরতে বেরিয়ে ছিলাম। বিশেষ করে, আমাদের বোলাররা যেন অনায়াসে সব কিছু করে দেখাল। যা সত্যিই আমার কাছে অবিশ্বাস্য। একই সঙ্গে অবিশ্বাস্য বিশ্বকাপ ফাইনালে ওঠাও। যা সত্যি হবে স্বপ্নেও ভাবিনি।’’ মর্গ্যান সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘আমাদের দলের বিশেষত্বটা কোথায় জানেন? ক্রিকেট কী ভাবে উপভোগ করতে হয়, তা আমরা শিখে গিয়েছি। সেমিফাইনাল ম্যাচটা তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। এমনকি কোনও ম্যাচে খারাপ খেললেও আমরা ভেঙে পড়িনি। এখন যদি আপনারা কেউ বলেন যে, ২০১৫-তে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার পরেও কী ভাবে এ বার আমরা ফাইনালে খেলছি তা হলে আমার হেসে ফেলা ছাড়া কিছুই করার থাকবে না। কারণ এ বার যা কিছু হয়েছে, তা খেলা উপভোগ করতে করতেই হয়েছে।’’