যেন মগের মুলুক! মোদী জমানায় এবার বাক স্বাধীনতাও খর্ব হওয়ার পথে। চেষ্টা চলছে সাহিত্যের কন্ঠরোধ করার। জানা গেছে, কবিতা লেখার অপরাধে বিজেপি শাসিত আসামে ১০ কবিকে খুঁজছে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে এফআইআর। নিম্ন আসামের আঞ্চলিক মিঞা ভাষায় লেখা এনআরসি বিরোধী কবিতাগুলি ইতিমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল। শুধু এনআরসিই না, আসামের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরা হয়েছে ওই সকল মিঞা কবিতায়। আসামের বিজেপি সরকারের এ হেন চোখরাঙানিকে কেন্দ্র করে প্রশ্ন উঠছে, ফ্যাসিবাদের আর বাকি রইল কী?
কাজি শারওয়ার হোসেন, হাফিজ আহমেদ, বেহলা সুলতানা, বনমল্লিকা চৌধুরি-সহ ১০ জন কবির বিরুদ্ধে ‘মিঞা কবিতা’ লেখায় পানবাজার থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। মধ্য গুয়াহাটির ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার ধর্মেন্দ্র কুমার দাস জানিয়েছেন, এই এফআইআর দায়ের করেছেন গুয়াহাটি বেলতলা এলাকায় বাসিন্দা প্রণব জিৎ দলই। অভিযোগ, অসমীয়াদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছেন মিঞা কবিরা। মিঞা কবিদের বিরুদ্ধে সোচ্চার অসমীয়া বুদ্ধিজীবীদের একটি বড় অংশও। তারা মিঞার স্বতন্ত্র অস্তিত্ব মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, মিঞাদেরও অসমিয়া পরিচয় নিয়েই বসবাস করতে হবে। মিঞা অসমিয়া ভাষারই উপভাষা। অসমিয়াতেই লিখতে হবে কবিতা।
জবাব দিয়েছেন মিঞারাও। তাঁদের বক্তব্য, মাতৃভাষায় কবিতা লেখা অপরাধ বলে মনে করেন না তাঁরা। শারওয়ার হোসেনের অভিযোগ, তাঁর লেখা কবিতার ভুল ব্যাখ্যা করে অসমীয়া-বিরোধী সাজিয়ে জীবন সংশয়ের সম্ভাবনা তৈরি করা হচ্ছে। তিনি জানান, শুধু মিঞাদের সমস্যাই নয়, আসামের বন্যা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সমস্যার কথাই উঠে আসছে তাঁদের কবিতায়। গণতান্ত্রিক দেশে কোন সম্প্রদায়ের, কোন ভাষার বা কোন কবির মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করা অসঙ্গত। বনমল্লিকা চৌধুরীর কটাক্ষ, ‘কী লিখব, কোন ভাষায় লিখব, কী বিষয়ে লিখব, ইত্যাদির অনুমতি গ্রহণের জন্য তবে বাের্ড গড়া হোক।’